১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় সুনামগঞ্জের দিরাই। পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর তীব্র প্রতিরোধ ও সম্মিলিত মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রায় দিশেহারা দখলদাররা সূর্য ওঠার আগেই দিরাইয়ের সীমান্ত ঘাঁটি ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। পরে দুপুর নাগাদ দিরাই পুরোপুরি শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হলে হাওরপাড়ের মানুষের ঘরে ঘরে বেজে ওঠে বিজয়ের আনন্দ।
দিরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা নিয়মিত আক্রমণ চালাচ্ছিলেন। ৭ ডিসেম্বর সকালে পাক সেনারা দিরাই-শাল্লা এলাকার বেশ কয়েকটি ঘাঁটি ত্যাগ করে পিছু হটে। সে খবর ছড়িয়ে পড়লে জনতা স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে স্বাগত জানান মুক্তিযোদ্ধাদের।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্যমতে, হাওরবেষ্টিত দিরাই থেকে কয়েকশ’ যুবক-যুবতী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে দিরাইয়ের কৃতিসন্তান ছাত্রনেতা তালেব উদ্দিনসহ ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। স্বাধীনতার পর থেকে দিরাইয়ে বিভিন্ন সময় তাদের স্মরণে শহীদ মিনার ও স্মৃতিচিহ্ন স্থাপন করা হয়েছে, যদিও বেশিরভাগই সংস্কারের অভাবে আজ অযত্নে পড়ে আছে।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা বলেন, দিরাই মুক্ত দিবস শুধু একটি ঐতিহাসিক দিন নয় এটি স্বাধীনতার মূল্য বুঝতে নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে। প্রতিবছরই দিনটি নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হলেও এবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুধুমাত্র ম্যারাথন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 

















