লন্ডন ০২:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাখিমারা স্লুইসগেট মেরামতের দাবিতে কৃষকদের ক্ষোভ

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার খাই হাওরের পানি নিষ্কাশন ও প্রবাহ ঠিক রাখতে বহু বছর আগে পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের মহাসিং নদীর পাখিমারা হাওরের সংযোগস্থলে স্লুইসগেট নির্মাণ করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু প্রায় দেড় যুগ ধরে স্লুইসগেটটি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। এতদিন কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে এটি মেরামত করলেও চলতি মৌসুমে স্লুইসগেটটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানান, পাখিমারা স্লুইসগেটের দুটি ঢালা নষ্ট হয়ে গেছে এবং নিয়ন্ত্রণযন্ত্র বিকল হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার না করা হলে পাহাড়ি ঢলের সময় ক্ষতিগ্রস্ত স্লুইসগেট দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করে ফসল তলিয়ে যেতে পারে। এতে পাখিমারা, পিঁপড়াকান্দি, খাই হাওরসহ দেখার হাওরের ফসল বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পাখিমারা স্লুইসগেটসহ পওর-২ অঞ্চলে মোট ২৪টি স্লুইসগেট রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি সংস্কারের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সেই তালিকায় পাখিমারা স্লুইসগেট অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির জন্য জরিপ টিমের ভুল দায়ী।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে পাখিমারা স্লুইসগেট সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও প্রকল্পভুক্ত না হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এক বোরো চাষি, জুনেদ বলেন, “সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ করছে, অথচ পানি প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্লুইসগেট মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই। স্লুইসগেট অকার্যকর থাকলে বাঁধ দিয়ে লাভ কী?”

স্থানীয় কৃষক ইজদানি মিয়া বলেন, “আমরা সারা বছর একটি মাত্র ফসলের জন্য অপেক্ষা করি। আমাদের চাওয়া, নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলতে পারি। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত স্লুইসগেটটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।”

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন বলেন, “আমরা সরেজমিনে পাখিমারা স্লুইসগেটের অবস্থা দেখেছি। এটি পুরোপুরি অকেজো। অবিলম্বে সংস্কার করা না হলে ফসল ডুবির আশঙ্কা রয়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর বিভাগ-২) মো. ইমদাদুল হক জানান, “এবার ৯টি স্লুইসগেট মেরামতের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, তবে পাখিমারা স্লুইসগেট সে তালিকায় ছিল না। খবর নিয়ে জেনেছি এটি ক্ষতিগ্রস্ত। জরুরি তহবিলের মাধ্যমে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় কৃষকরা দ্রুত স্লুইসগেট সংস্কারের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ট্যাগ:

রাত সাড়ে ৯টার পর সিলেটের সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে

পাখিমারা স্লুইসগেট মেরামতের দাবিতে কৃষকদের ক্ষোভ

প্রকাশের সময়: ০৫:১৪:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার খাই হাওরের পানি নিষ্কাশন ও প্রবাহ ঠিক রাখতে বহু বছর আগে পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের মহাসিং নদীর পাখিমারা হাওরের সংযোগস্থলে স্লুইসগেট নির্মাণ করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু প্রায় দেড় যুগ ধরে স্লুইসগেটটি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। এতদিন কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে এটি মেরামত করলেও চলতি মৌসুমে স্লুইসগেটটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানান, পাখিমারা স্লুইসগেটের দুটি ঢালা নষ্ট হয়ে গেছে এবং নিয়ন্ত্রণযন্ত্র বিকল হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার না করা হলে পাহাড়ি ঢলের সময় ক্ষতিগ্রস্ত স্লুইসগেট দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করে ফসল তলিয়ে যেতে পারে। এতে পাখিমারা, পিঁপড়াকান্দি, খাই হাওরসহ দেখার হাওরের ফসল বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পাখিমারা স্লুইসগেটসহ পওর-২ অঞ্চলে মোট ২৪টি স্লুইসগেট রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি সংস্কারের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সেই তালিকায় পাখিমারা স্লুইসগেট অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির জন্য জরিপ টিমের ভুল দায়ী।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে পাখিমারা স্লুইসগেট সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও প্রকল্পভুক্ত না হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এক বোরো চাষি, জুনেদ বলেন, “সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ করছে, অথচ পানি প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্লুইসগেট মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই। স্লুইসগেট অকার্যকর থাকলে বাঁধ দিয়ে লাভ কী?”

স্থানীয় কৃষক ইজদানি মিয়া বলেন, “আমরা সারা বছর একটি মাত্র ফসলের জন্য অপেক্ষা করি। আমাদের চাওয়া, নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলতে পারি। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত স্লুইসগেটটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।”

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন বলেন, “আমরা সরেজমিনে পাখিমারা স্লুইসগেটের অবস্থা দেখেছি। এটি পুরোপুরি অকেজো। অবিলম্বে সংস্কার করা না হলে ফসল ডুবির আশঙ্কা রয়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর বিভাগ-২) মো. ইমদাদুল হক জানান, “এবার ৯টি স্লুইসগেট মেরামতের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, তবে পাখিমারা স্লুইসগেট সে তালিকায় ছিল না। খবর নিয়ে জেনেছি এটি ক্ষতিগ্রস্ত। জরুরি তহবিলের মাধ্যমে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় কৃষকরা দ্রুত স্লুইসগেট সংস্কারের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।