সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে শিশুদের ব্যবহার করে কয়লা চোরাচালানের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। চোরাকারবারি চক্র শিশুদের সহানুভূতি কাজে লাগিয়ে অবৈধ কাজে যুক্ত করছে। স্কুল ফাঁকি দিয়ে এসব শিশু চোরাই কয়লা বহন করছে, যেখানে তাদের অভিভাবকরাও অনেক ক্ষেত্রে মদত দিচ্ছেন।
শিশুদের দিয়ে চোরাই কয়লা বহন
সরেজমিনে ট্যাকেরঘাট সীমান্তে দুই দিন ও এক রাত অবস্থান করে দেখা গেছে, পরিবারসহ শিশুরা এই চোরাচালানে যুক্ত হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে আসা কয়লা শিশুরা মাথায় করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিতে ধানের জমির আইল ও লেকপাড় ব্যবহার করে ফিল্মি স্টাইলে চলে এই কয়লা বহনের কাজ। কখনো বিজিবির উপস্থিতি টের পেলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ কাজে জড়িত এক শিশু, হুমাশা (ছদ্মনাম), জানায় যে প্রতিদিন স্কুল শেষে সে পরিবারের সঙ্গে কয়লা বহনে যায়। একেকটি বস্তা ডিপোতে পৌঁছে দিতে পারলেই নগদ টাকা মেলে। অনেকে পাহাড়ের খনিতেও কাজ করতে যায়, যেখানে খনি ধসে বা অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনাও ঘটছে।
শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে শিশুরা
ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, অনেক শিক্ষার্থী স্কুল ফাঁকি দিয়ে চোরাই কাজে লিপ্ত হচ্ছে। ওয়ান শ্রেণির শিশুরাও এই চক্রের সাথে যুক্ত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক হুমকি।
প্রধান শিক্ষক হালিমা বেগম বলেন, “আমাদের স্কুলের ২০৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেকে অনিয়মিত। দরিদ্রতার কারণে মা-বাবারাই সন্তানদের অবৈধ কাজে পাঠাচ্ছেন। আমরা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত সভা করছি, কিন্তু এটি সমাধানের জন্য দরিদ্রদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করা প্রয়োজন।”
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ ও করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ কাজে যুক্ত হওয়া তাদের অপরাধপ্রবণ করে তুলবে এবং ভবিষ্যতে বড় চোরাচালান চক্রে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়াবে। সরকারি উদ্যোগে দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করছেন তারা।
কালনী ভিউ ডেস্ক : 









