সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও বোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিলন খাঁন ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এক সৌদি প্রবাসীর ক্রয়কৃত ভূমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও মেলেনি সুরাহা।
জানা যায়, উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের বাগানবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসী মো. আব্দুর রশিদ ২০০৪ সালে চেয়ারম্যান মিলন খাঁনের পিতা আব্দুশ শহীদ খাঁনের কাছ থেকে বোগলাবাজার এলাকার আলমখালি মৌজার ১৫ জে.এল. নং ১৩৮/৪৩৮, ৫২৫ নং দাগভুক্ত ১৮ শতক ভূমি দলিলমূলে ক্রয় করেন। ক্রয়ের পর দখল বুঝে নিয়ে পাঁচ বছর ধরে বাউন্ডারি দিয়ে তা সংরক্ষণেও রাখেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ২০০৯ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মিলন খাঁনের প্রতিপক্ষকে সমর্থন করায় নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষিপ্ত হন চেয়ারম্যান। পরে রাতের আঁধারে ভূমির বাউন্ডারি ভেঙে জোরপূর্বক জায়গাটি দখলে নিয়ে সেখানে চোরাই গরুর খামার স্থাপন করেন।
আব্দুর রশিদের ছেলে পায়েল আহমদ বলেন, আমার বাবা বিদেশ থাকাকালে জায়গাটি আমরা নিয়ম মাফিক ক্রয় করি এবং দখলেও ছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান মিলন খাঁন ক্ষমতার অপব্যবহার করে তা দখলে নিয়েছেন। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলার ভয় ও গুমের হুমকি দেওয়া হয়।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, এ ঘটনায় পরিবারটি একাধিকবার মানববন্ধন ও লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। ভুক্তভোগীরা ২০১২ সালে আদালতের শরণাপন্ন হলেও পরবর্তীতে প্রাণনাশের হুমকির মুখে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য হন।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া বলেন, আব্দুর রশিদ ২০০৪ সালে চেয়ারম্যানের বাবার কাছ থেকে বৈধভাবে জায়গাটি কিনেছেন। কিন্তু নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগকে ভোট না দেওয়ায় চেয়ারম্যান প্রতিশোধমূলকভাবে জমি দখলে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মিলন খাঁনের ভাষ্য, আব্দুর রশিদের ভূমি আমরা দাগ অনুযায়ী বুঝিয়ে দিতে রাজি আছি। কিন্তু তারা ভুল দাগের জায়গা দাবি করছেন। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ রয়েছে এবং প্রবাসীর ভাই জাহেদের সঙ্গে আপস-মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
চেয়ারম্যানের পিতা আব্দুশ শহীদ খাঁন বলেন, আমরা আব্দুর রশিদের কাছে জমি বিক্রি করেছি, তবে বর্তমানে যে জমিটি আমাদের দখলে, সেটি তার নয়। তার জমি পুকুরপাড়ে রয়েছে।
এদিকে দোয়ারাবাজার থানার এসআই মোহন বলেন, ভূমি সংক্রান্ত বিষয় মূলত আদালতের বিষয়। তবে সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই সমাধান হবে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ভূমি নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ ও আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে দ্রুত সমাধান চান ভুক্তভোগীরা।
কালনী ভিউ ডেস্কঃ 









