লন্ডন ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শীঘ্রই আসছে ঘোষণা: কে হচ্ছেন দিরাই শাল্লায় ধানের শীষের প্রার্থী

সুনামগঞ্জ-২ দিরাই-শাল্লা আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ দিন দিন বেড়েই চলছে। দলের মনোনয়ন বোর্ডে যাচাই-বাছাইয়ের শেষ ধাপ চলছে এবং যে কোনো মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতে পারে বলে জানা গেছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী কে হবেন এ প্রশ্ন ঘুরছে প্রতিটি রাজনৈতিক আড্ডায়, চায়ের দোকানে, গ্রামের চৌমুহনীতে আর শহরের মোড়ে মোড়ে। দলের ভেতরে বাইরে একইসঙ্গে কৌতূহল, প্রত্যাশা ও জল্পনার ঢেউ।

এই আসনে বিএনপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী হলেও ভোটার কাঠামো, বিশেষ করে হিন্দুধর্মাবলম্বী ভোটারদের বড় অংশের অবস্থান বিবেচনায় বিএনপির প্রার্থীর জয় সম্ভাবনা এখনো বেশ শক্ত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। মোট ২ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি ভোটারের এই আসনে হিন্দু জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে মুক্তচিন্তা ও উন্নয়নকেন্দ্রিক রাজনীতির প্রতি বেশি ঝোঁক দেখিয়ে আসায় বিএনপির প্রার্থী অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও মনোনয়ন দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দুইজন, নাছির উদ্দীন চৌধুরী ও তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল। বিশেষ করে পাবেল চৌধুরীকে নিয়ে তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা আরও বেশি। দলের বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বশীল নেতারা মনে করছেন, বিগত ১৭ বছর ধরে সাংগঠনিক কার্যক্রমে তাঁর অবিচ্ছিন্ন সম্পৃক্ততা, মাঠে সক্রিয় উপস্থিতি এবং দলে গ্রহণযোগ্যতার কারণে ধানের শীষের মনোনয়নে তিনি এগিয়ে আছেন। তৃণমূলের অনেকে সরাসরি বলেছেন, দীর্ঘসময় ধরে যিনি দিরাই-শাল্লার নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিলেন, মানুষের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেছেন এবং দলের প্রতিটি আন্দোলনে সামনে ছিলেন মনোনয়ন তার প্রাপ্যই।

তবে নাছির উদ্দীন চৌধুরীও দৌড়ের বাইরে নন। তিনি অসুস্থ থাকলেও তাঁর অনুসারীরা তৎপর রয়েছে এবং তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। ফলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিযোগিতা যে জমাট থাকবে তা স্পষ্ট। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী রুমি।

এদিকে জামায়াতও তাদের অবস্থান ধরে রাখতে মাঠে সক্রিয় রয়েছে, তবে হিন্দুধর্মাবলম্বী ভোটারদের উল্লেখযোগ্য অংশ সাধারণত জামায়াত বিরোধী হওয়ায় এই আসনে তাদের সম্ভাবনা তুলনামূলক কম বলে মনে করছেন অনেকেই। অন্যদিকে বিএনপির অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দ্রুত মনোনয়ন ঘোষণা না করা। তৃণমূলের ধারণা, ঘোষণায় বিলম্ব হলে মাঠ প্রস্তুতি পিছিয়ে যেতে পারে এবং এতে প্রতিপক্ষ সুবিধা পেতে পারে।

সব মিলিয়ে দিরাই-শাল্লার রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন একটিই প্রশ্ন কে হচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থী। তৃণমূলের বিশাল অংশ যখন তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেলের নাম উচ্চারণ করছেন, তখন মাঠের বাস্তবতাও বলছে- মনোনয়ন ও নির্বাচনী লড়াই দুটোই হবে অত্যন্ত তীব্র এবং ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর। ঘোষণা আসার অপেক্ষায় এখন দিরাই-শাল্লার রাজনীতি এক অদৃষ্টপূর্ব উৎকণ্ঠা ও প্রত্যাশায় জমে উঠেছে।

দিরাই পৌর বিএনপির আহবায়ক, সাবেক কাউন্সিল মিজানুর রহমান বলেন, যখন কেউ ছিল না, তখন দলের জন্য পাবেল চৌধুরী ছিলেন। রোদ, বৃষ্টি, দমন-পীড়ন সব সময় ময়দানে ছিলেন। তাই তৃণমূল মনে করে মনোনয়ন তার পাওয়াই ন্যায্য। জামায়াতের প্রার্থী যেভাবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে, তাকে প্রতিহত করতে পাবেল চৌধুরীর মতো সংগঠিত ও সাহসী নেতার বিকল্প নেই। বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হলে ইনশাআল্লাহ আমাদের বিজয় নিশ্চিত।

প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিএনপি সারা দেশে ২৩৭টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও সুনামগঞ্জ-২ দিরাই-শাল্লা আসনে এখনো কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। এছাড়া এ আসনে বিএনপি-সমমনা দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী দেওয়ার গুঞ্জন থাকলেও হিন্দু ভোটারের সংখ্যা বেশি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিএনপি দলীয় প্রার্থীই দিবে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

শীঘ্রই আসছে ঘোষণা: কে হচ্ছেন দিরাই শাল্লায় ধানের শীষের প্রার্থী

প্রকাশের সময়: ১২:২২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

সুনামগঞ্জ-২ দিরাই-শাল্লা আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ দিন দিন বেড়েই চলছে। দলের মনোনয়ন বোর্ডে যাচাই-বাছাইয়ের শেষ ধাপ চলছে এবং যে কোনো মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতে পারে বলে জানা গেছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী কে হবেন এ প্রশ্ন ঘুরছে প্রতিটি রাজনৈতিক আড্ডায়, চায়ের দোকানে, গ্রামের চৌমুহনীতে আর শহরের মোড়ে মোড়ে। দলের ভেতরে বাইরে একইসঙ্গে কৌতূহল, প্রত্যাশা ও জল্পনার ঢেউ।

এই আসনে বিএনপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী হলেও ভোটার কাঠামো, বিশেষ করে হিন্দুধর্মাবলম্বী ভোটারদের বড় অংশের অবস্থান বিবেচনায় বিএনপির প্রার্থীর জয় সম্ভাবনা এখনো বেশ শক্ত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। মোট ২ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি ভোটারের এই আসনে হিন্দু জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে মুক্তচিন্তা ও উন্নয়নকেন্দ্রিক রাজনীতির প্রতি বেশি ঝোঁক দেখিয়ে আসায় বিএনপির প্রার্থী অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও মনোনয়ন দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দুইজন, নাছির উদ্দীন চৌধুরী ও তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল। বিশেষ করে পাবেল চৌধুরীকে নিয়ে তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা আরও বেশি। দলের বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বশীল নেতারা মনে করছেন, বিগত ১৭ বছর ধরে সাংগঠনিক কার্যক্রমে তাঁর অবিচ্ছিন্ন সম্পৃক্ততা, মাঠে সক্রিয় উপস্থিতি এবং দলে গ্রহণযোগ্যতার কারণে ধানের শীষের মনোনয়নে তিনি এগিয়ে আছেন। তৃণমূলের অনেকে সরাসরি বলেছেন, দীর্ঘসময় ধরে যিনি দিরাই-শাল্লার নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিলেন, মানুষের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেছেন এবং দলের প্রতিটি আন্দোলনে সামনে ছিলেন মনোনয়ন তার প্রাপ্যই।

তবে নাছির উদ্দীন চৌধুরীও দৌড়ের বাইরে নন। তিনি অসুস্থ থাকলেও তাঁর অনুসারীরা তৎপর রয়েছে এবং তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। ফলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিযোগিতা যে জমাট থাকবে তা স্পষ্ট। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী রুমি।

এদিকে জামায়াতও তাদের অবস্থান ধরে রাখতে মাঠে সক্রিয় রয়েছে, তবে হিন্দুধর্মাবলম্বী ভোটারদের উল্লেখযোগ্য অংশ সাধারণত জামায়াত বিরোধী হওয়ায় এই আসনে তাদের সম্ভাবনা তুলনামূলক কম বলে মনে করছেন অনেকেই। অন্যদিকে বিএনপির অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দ্রুত মনোনয়ন ঘোষণা না করা। তৃণমূলের ধারণা, ঘোষণায় বিলম্ব হলে মাঠ প্রস্তুতি পিছিয়ে যেতে পারে এবং এতে প্রতিপক্ষ সুবিধা পেতে পারে।

সব মিলিয়ে দিরাই-শাল্লার রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন একটিই প্রশ্ন কে হচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থী। তৃণমূলের বিশাল অংশ যখন তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেলের নাম উচ্চারণ করছেন, তখন মাঠের বাস্তবতাও বলছে- মনোনয়ন ও নির্বাচনী লড়াই দুটোই হবে অত্যন্ত তীব্র এবং ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর। ঘোষণা আসার অপেক্ষায় এখন দিরাই-শাল্লার রাজনীতি এক অদৃষ্টপূর্ব উৎকণ্ঠা ও প্রত্যাশায় জমে উঠেছে।

দিরাই পৌর বিএনপির আহবায়ক, সাবেক কাউন্সিল মিজানুর রহমান বলেন, যখন কেউ ছিল না, তখন দলের জন্য পাবেল চৌধুরী ছিলেন। রোদ, বৃষ্টি, দমন-পীড়ন সব সময় ময়দানে ছিলেন। তাই তৃণমূল মনে করে মনোনয়ন তার পাওয়াই ন্যায্য। জামায়াতের প্রার্থী যেভাবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে, তাকে প্রতিহত করতে পাবেল চৌধুরীর মতো সংগঠিত ও সাহসী নেতার বিকল্প নেই। বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হলে ইনশাআল্লাহ আমাদের বিজয় নিশ্চিত।

প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিএনপি সারা দেশে ২৩৭টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও সুনামগঞ্জ-২ দিরাই-শাল্লা আসনে এখনো কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। এছাড়া এ আসনে বিএনপি-সমমনা দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী দেওয়ার গুঞ্জন থাকলেও হিন্দু ভোটারের সংখ্যা বেশি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিএনপি দলীয় প্রার্থীই দিবে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।