সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে রবিবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হলো প্রতীকধর্মী নাটক ‘ডেথ সার্কেল’। সুত্রধর থিয়েটারের আয়োজনে এবং রঙ্গালয় সুনামগঞ্জ থিয়েটারের পরিবেশনায় এই নাটকটি দর্শকদের এক গভীর নাট্য-অভিজ্ঞতার স্বাদ দেয়। কাহিনি, অভিনয় ও আলোকসজ্জার অসাধারণ সমন্বয়ে এটি সিলেটের নাট্যাঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নাটকটির রচয়িতা সুফি সুফিয়ান এবং নির্দেশনায় ছিলেন আব্দুল্লাহ আশরাফ।
নাটকের কাহিনি পিঁপড়ার জীবনাচরণকে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরেছে। অপরাধ, নৈতিকতা ও মৃত্যুর টানাপোড়েন নিয়ে গড়ে ওঠা এই নাটক দর্শকদের নতুন চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে। নাটকের প্রধান চরিত্রগুলোতে ছিলেন তামিম রায়হান (সর্দার চরিত্র), অলিদ হাসান তানভির (অপরাধী পিঁপড়ে চরিত্র) এবং জিহান যোবায়ের (সন্ন্যাসী চরিত্র)। তাদের নিখুঁত অভিনয়ে নাটকটি প্রাণ পেয়েছে। এছাড়া, জোনাকি পাল, পূজা তালুকদার, তন্না দাস, ফারহান চৌধুরী, সুচনা ও রনি— সবাই তাদের চরিত্রে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। সংলাপ ও শরীরী ভাষার নিখুঁত উপস্থাপনায় তারা দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।
নাটকের আলোকসজ্জা, সঙ্গীত ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিল অভিনবত্ব। প্রতিটি দৃশ্য শিল্পসুষমায় পূর্ণ ছিল, যা দর্শকদের পুরো সময় মঞ্চের সঙ্গে আবদ্ধ করে রেখেছিল। আলো-ছায়ার দারুণ সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছিল রহস্যময় এক পরিবেশ, যা নাটকের ভাবগাম্ভীর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
স্থানীয় নাট্যপ্রেমীরা নাটকটি দেখে অভিভূত হয়েছেন। তাদের মতে, এ ধরনের সৃজনশীল উপস্থাপনা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছাতে পারে। সুত্রধর থিয়েটার ও রঙ্গালয় সুনামগঞ্জ থিয়েটারের এই যৌথ প্রয়াস থিয়েটারচর্চার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
‘ডেথ সার্কেল’ শুধু একটি নাটক নয়, এটি সিলেটের থিয়েটার সংস্কৃতির এক ব্যতিক্রমী সংযোজন। রঙ্গালয় সুনামগঞ্জ থিয়েটারের শৈল্পিক দক্ষতা ও সুত্রধর থিয়েটারের সৃজনশীলতা মিলে নাটকটিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে, যা দীর্ঘদিন দর্শকদের মনে গেঁথে থাকবে।