শিশুদের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে দেশের বেশিরভাগ অভিভাবকের সচেতনতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি এডুকো বাংলাদেশ এবং ইন্সপায়ার অ্যাডভাইজরি অ্যান্ড কনসালটিং লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত ‘চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং সিচুয়েশন অ্যানালাইসিস রিপোর্ট ২০২৪’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৭৫ শতাংশ অভিভাবক তাঁদের সন্তানের জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে জানেন না। ক্যারিয়ার পরিকল্পনায় অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা না করায় অনেক শিশু তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ ও অর্জনে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। জরিপে অংশ নেওয়া ১২৪ শিশুর মধ্যে মাত্র ৩৯ জন বড়দের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছে। ৫৫ জন শিশু নিজেদের উদ্বেগ সম্পর্কে অভিভাবকদের জানিয়েছে।
এডুকো বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস আব্দুর রহিম জানান, গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের অধিকার ও কল্যাণ নিয়ে তাদের পরিবার, শিক্ষক এবং সমাজের ভূমিকা মূল্যায়ন করা। গবেষণায় অংশ নেয়া ১১টি জেলার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব জেলা থেকে স্কুলের শিক্ষার্থী, পথশিশু, তাদের পরিবার, শিক্ষক এবং স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা ও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উঠে আসে, দেশের ৬০ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে যায় না। কুসংস্কার, অভিভাবকদের অজ্ঞতা এবং অবকাঠামোগত ঘাটতি এর প্রধান কারণ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতা কম এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ শতাংশ শিক্ষকই প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষায় প্রশিক্ষিত।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মমতাজ আহমেদ বলেন, “শিশুদের সুরক্ষায় মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে এ প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।”
এডুকো বাংলাদেশের পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার হালিমা আক্তার বলেন, “শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন এবং একটি পৃথক অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।”
গবেষণার এ প্রতিবেদনটি দেশের শিশুদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও তাদের অধিকার সুরক্ষায় অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে তুলে ধরে।