ইসরায়েল ২০২৪ সালে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অন্তত ৯৭০টি ফিলিস্তিনি বাড়ি ও স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে। একই সঙ্গে, আরও ৭৬৫টি বাড়ি ও স্থাপনা ভাঙার নির্দেশ জারি করেছে। সব মিলিয়ে ৫৩ হাজার ৫৫ ডুনাম বা ৫৩ বর্গকিলোমিটার জমি দখল করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি সংস্থা ল্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বরাত দিয়ে লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনিদের মালিকানাধীন ৫৯ হাজার ১৬৩টি গাছ উপড়ে ফেলেছে বা নষ্ট করেছে। এর মধ্যে ৫২ হাজার ৩৭৩টি গাছ পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।
ল্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রতিবেদন অনুসারে, পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৯৫৫টি রাস্তা ও প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীরা। এর মধ্যে ৭৬টি সড়ক বা প্রবেশপথে লোহার গেট বসানো হয়েছে। এগুলো ফিলিস্তিনিদের চলাচলে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ৩৮টি ফিলিস্তিনি বেদুইন সম্প্রদায়কে তাদের বাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত করেছে। এই বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩৫৫টি পরিবার রয়েছে, যাদের মোট সদস্যসংখ্যা ২ হাজার ২০। ইসরায়েল ২০২৪ সালে পশ্চিম তীরের ২৫টি অবৈধ পশুচারণ বসতি স্থাপন করেছে। এগুলোর মাধ্যমে আরও কয়েক হাজার ডুনাম ফিলিস্তিনি জমি দখলের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২০২৪ সালের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ হেবরনের দক্ষিণে ফিলিস্তিনিদের জমি দখলের জন্য একটি সরকারি আদেশ জারি করেন। এ ছাড়া, ওই বছর অধিকৃত পশ্চিম তীরের ‘এরিয়া বি’তে সাতটি নতুন বসতি স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি বেথলেহেম অঞ্চলের বনভূমিতে স্থাপন করা হয়েছে। এই বনভূমি অসলো চুক্তি ও এর পরিপূরক দলিল অনুযায়ী একটি সংরক্ষিত প্রাকৃতিক অঞ্চল।
এদিকে ইসরায়েলের গণহত্যার কারণে গাজার জনসংখ্যা ৬ শতাংশ কমে গেছে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ফিলিস্তিনি কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর (পিসিবিএস) প্রধান ওলা আওয়াদ বলেন, অঞ্চলটির জনসংখ্যা ২১ লাখে নেমে এসেছে। এই সংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১ লাখ ৬০ হাজার জন কম।
অপর দিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবের বরাত দিয়ে মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন কেবল মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়নি, সেখানকার মানুষের শেষ আশ্রয় এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গও কেড়ে নিয়েছে। ইসরায়েলি হামলা গাজাকে স্রেফ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এসব ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১১ হাজারের বেশি মানুষ চাপা পড়ে গেছে। এই সংখ্যাকে নিখোঁজ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।