ভয়াবহ দাবানলে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে বুধবার (৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন। ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া আগুনে শত শত ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় এক লাখের বেশি মানুষকে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগুনের তীব্রতা ও বিস্তারের কারণে তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে এখনও পাঁচটি দাবানল সক্রিয় আছে, যার দুটি আবার পুরো শহরকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে। কোনওটাই এখনও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
মঙ্গলবার থেকে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দাবানল। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, জোরালো বাতাসে আগুন আরও বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট বেগ পেতে দেখা গেছে দমকলকর্মীদের।
পশ্চিমদিকে প্যালিসেডস দাবানলে ১৫ হাজার ৮৩২ একর জমি ও এক হাজার স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। সান্তা মনিকা ও মালিবুর মধ্যবর্তী পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়া এই আগুন মঙ্গলবার প্রশান্ত মহাসাগরে প্রাকৃতিকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এটি ইতোমধ্যেই লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে অন্যতম ধ্বংসাত্মক দাবানলে পরিণত হয়েছে।
পূর্বদিকে সান গ্যাব্রিয়েল পর্বতমালার পাদদেশে ইটন দাবানল ১০ হাজার ৬০০ একর জমি গ্রাস করেছে। এখানে অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা। প্রাথমিকভাবে আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে বলে অনুমান করেছে বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা অ্যাকুওয়েদার।
সংবাদ সম্মেলনে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির জরুরি ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক কেভিন ম্যাকগোয়ান বলেছেন, আমরা এমন এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করছি যা ইতিহাসে দেখা যায়নি। এর চেয়ে পরিষ্কারভাবে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।
দাবানলের শিকার হওয়ার আগেও বেশকিছু সমস্যার সম্মুখীন ছিল সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া। গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ার বর্ষা মৌসুমে এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি সেখানে। এছাড়া পূর্বদিক থেকে পাহাড়ি এলাকার দিকে বয়ে আসা শুষ্ক মরু হাওয়ার কারণে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, দাবানলের সাধারণ সময়ের বাইরে এবার আগুন লেগেছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চরম আবহাওয়ার ফল। বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়তে থাকলে এসব দুর্যোগে আরও ভুগতে হবে মানুষকে।