সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার শাহিদাবাদ-নলিকাটা বর্ডার হাটটি দীর্ঘ ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। হাটটি পুনরায় চালুর দাবিতে কার্ডধারী ব্যবসায়ী ও হাট পরিচালনাকারীরা জোরালো দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ২০২৩ সালের ২৪ মে সুনামগঞ্জ সীমান্তের ১২০৩/৭-এস ও ১২০৩/৮-এর মধ্যবর্তী জিরো লাইনে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের শাহিদাবাদ এলাকায় এ বর্ডার হাট চালু করা হয়। হাটের আয়তন ৭৫ ফুট বাই ৭৫ ফুট। নিরাপত্তার জন্য চারপাশে তারকাটার বেড়া এবং প্রবেশ ও বাহিরের জন্য দুটি গেট রয়েছে।
উভয় দেশের চুক্তি অনুযায়ী, বর্ডার হাটে ২৫টি নির্দিষ্ট পণ্য কেনাবেচা করা হতো। সীমান্তবর্তী ৫ কিলোমিটারের ভেতরের বাসিন্দারা সহজেই হাটে অংশ নিতে পারতেন, তবে বাইরে থেকে আসা ক্রেতাদের বর্ডার হাট পরিচালনা কমিটির অনুমতি নিতে হতো। বাংলাদেশ ও ভারতের ২৫টি করে দোকান বরাদ্দ ছিল এবং প্রতি দেশের ৫৪০ জন করে কার্ডধারী ক্রেতা কেনাকাটার সুযোগ পেতেন।
হাটটি চালু থাকা অবস্থায় শাকসবজি, মসলা, বাঁশ, বনজ দ্রব্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, সিরামিক পণ্য, লুঙ্গি, চিনি, পুরাতন কাপড় ও ফলের রসসহ বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচা হতো। তবে শুধুমাত্র কার্ডধারী ক্রেতারাই কেনাকাটা করতে পারতেন। পর্যটকরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে হাটে প্রবেশের সুযোগ পেতেন। প্রতি ক্রেতা সর্বোচ্চ ২০০ মার্কিন ডলারের পণ্য কিনতে পারতেন, তবে এককভাবে কোনো পণ্য কেনা যেত না—এই সীমার মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচটি পণ্য ক্রয় করতে হতো।
হাটটি বন্ধ থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। শাহিদাবাদ-নলিকাটা বর্ডার হাটের কার্ডধারী ব্যবসায়ী ও পল্লী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ছয় মাস ধরে হাটটি বন্ধ থাকায় আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম অসুবিধায় রয়েছি। দ্রুত হাট চালুর জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানাই।”
স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন জানান, “হাট চালু থাকাকালীন ভারতের ক্রেতাদের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যাপক চাহিদা ছিল। প্রতিটি হাটবারে বাংলাদেশি কোম্পানির মালামাল উপচে পড়ত, এবং বিকেল ৪টার আগেই সব প্লাস্টিক পণ্য বিক্রি হয়ে যেত।”
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্ডার হাট পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবুল হাসেম বলেন, “বর্ডার হাটটি কবে চালু হবে সে বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা দ্রুত হাট চালুর দাবি জানিয়েছেন, যাতে তাদের জীবন-জীবিকা পুনরায় সচল হয়।