লন্ডন ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেড় বছরের কাজ শেষ হয়নি ৬ বছরেও!

 

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে কারিগরি শিক্ষার একমাত্র বিদ্যাপীঠ দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সাইডিং ঘাট সংলগ্ন হিজলতলায় প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা ছিলো (৫৪০ দিন) দেড় বছর। কিন্তু ঠিকাদারের অনিয়ম ও গাফিলতিতে ছয় বছরেও সম্পন্ন হয়নি ওই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ। ফলে পাঠদানের ব্যাঘাত ঘটছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারের অনিয়ম আর গাফিলতিতে ছয় বছরেও শেষ হয়নি প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণকাজ। কবে শেষ হবে সে নিশ্চয়তাও নেই।

জানা যায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৮ টাকা বরাদ্দে দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচতলা একাডেমিক কাম চারতলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের সাথে ওয়ার্কশপ ও একতলা সার্ভিস এরিয়াসহ পয়ঃনিষ্কাসন, বিদ্যুতায়ন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থাকরণ, বাউন্ডারি দেয়াল, আভ্যন্তরীন রাস্তা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ যৌথভাবে পায় ময়মনসিংহের মেসার্স ভাওয়াল কন্সট্রাকশন ওয়েস্টার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা. লি.) এবং ঢাকার গুলশান নিকেতন এলাকার এম. এম. বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চুক্তিতে লাইসেন্স এনে কাজ করছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা , জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ঠিকাদার মাহতাবুল হাসান সমুজ।

দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের লামাসানিয়া গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী বলেন, ‘সময়মতো কাজ সম্পন্ন হলে আরো চার বছর আগে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যেতো। কাজের ধীরগতিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানাই।’

সুরমা ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের কাজ করতে যদি ছয় বছর সময় লাগে তাহলে পাঠদান কার্যক্রম কীভাবে শুরু হবে? এসব অনিয়মে প্রশাসনের তদারকির অভাব রয়েছে।’

ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এ. এস. এম. নাঈম বলেন, ‘আমি যোগদানের পর গেল বছর জানুয়ারিতে শুরু হয় একাডেমিক কার্যক্রম। নির্মাণকাজ যত আগে সম্পন্ন হতো একাডেমিক কার্যক্রমও শুরু হতো তত আগে। কাজ শেষ না হওয়ায় শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। অফিস রুমও স্থানান্তর করা যাচ্ছেনা। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি।’

নির্মাণ কাজের ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠিকাদার মাহতাবুল হাসান সমুজ বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় কাজ পিছিয়ে গেছে। এখন কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। আশারাখি একমাসে পুরো কাজ শেষ হবে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি সুনামগঞ্জে যোগদানের পর থেকে দেড় বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের কাজে গতি বেড়েছে। এর আগে শুনেছি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কাজ বন্ধ ছিল। কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়েছি। মাস দুয়েকের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে আমি আশাবাদী।’

 

ট্যাগ:

লিবিয়া থেকে ফিরিয়ে আনা হলো ১৭৩ বাংলাদেশিকে

দেড় বছরের কাজ শেষ হয়নি ৬ বছরেও!

প্রকাশের সময়: ০৬:২৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

 

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে কারিগরি শিক্ষার একমাত্র বিদ্যাপীঠ দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সাইডিং ঘাট সংলগ্ন হিজলতলায় প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা ছিলো (৫৪০ দিন) দেড় বছর। কিন্তু ঠিকাদারের অনিয়ম ও গাফিলতিতে ছয় বছরেও সম্পন্ন হয়নি ওই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ। ফলে পাঠদানের ব্যাঘাত ঘটছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারের অনিয়ম আর গাফিলতিতে ছয় বছরেও শেষ হয়নি প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণকাজ। কবে শেষ হবে সে নিশ্চয়তাও নেই।

জানা যায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৮ টাকা বরাদ্দে দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচতলা একাডেমিক কাম চারতলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের সাথে ওয়ার্কশপ ও একতলা সার্ভিস এরিয়াসহ পয়ঃনিষ্কাসন, বিদ্যুতায়ন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থাকরণ, বাউন্ডারি দেয়াল, আভ্যন্তরীন রাস্তা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ যৌথভাবে পায় ময়মনসিংহের মেসার্স ভাওয়াল কন্সট্রাকশন ওয়েস্টার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা. লি.) এবং ঢাকার গুলশান নিকেতন এলাকার এম. এম. বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চুক্তিতে লাইসেন্স এনে কাজ করছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা , জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ঠিকাদার মাহতাবুল হাসান সমুজ।

দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের লামাসানিয়া গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী বলেন, ‘সময়মতো কাজ সম্পন্ন হলে আরো চার বছর আগে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যেতো। কাজের ধীরগতিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানাই।’

সুরমা ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের কাজ করতে যদি ছয় বছর সময় লাগে তাহলে পাঠদান কার্যক্রম কীভাবে শুরু হবে? এসব অনিয়মে প্রশাসনের তদারকির অভাব রয়েছে।’

ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এ. এস. এম. নাঈম বলেন, ‘আমি যোগদানের পর গেল বছর জানুয়ারিতে শুরু হয় একাডেমিক কার্যক্রম। নির্মাণকাজ যত আগে সম্পন্ন হতো একাডেমিক কার্যক্রমও শুরু হতো তত আগে। কাজ শেষ না হওয়ায় শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। অফিস রুমও স্থানান্তর করা যাচ্ছেনা। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি।’

নির্মাণ কাজের ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠিকাদার মাহতাবুল হাসান সমুজ বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় কাজ পিছিয়ে গেছে। এখন কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। আশারাখি একমাসে পুরো কাজ শেষ হবে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি সুনামগঞ্জে যোগদানের পর থেকে দেড় বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের কাজে গতি বেড়েছে। এর আগে শুনেছি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কাজ বন্ধ ছিল। কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়েছি। মাস দুয়েকের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে আমি আশাবাদী।’