লন্ডন ০১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাওরের রেগুলেটর অচল: বোরো ফসল ও মৎস্য সম্পদ ঝুঁকিতে

 

হাওরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম রেগুলেটরগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। হাওরে নির্মিত ৫৭টি রেগুলেটরের মধ্যে ১২টি সম্পূর্ণ অচল, আর ৩৬টি কার্যকর হলেও সেগুলোরও মেরামত প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বোরো মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে ফসলহানির ঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মৎস্য সম্পদ।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পওর) তথ্য অনুযায়ী, তাদের অধীনে ৩৩টি রেগুলেটরের মধ্যে ৯টি সম্পূর্ণ অচল, ২৩টি আংশিক সচল, তবে কার্যকর রাখতে হলে ৩১টি রেগুলেটরেরই সংস্কার প্রয়োজন। বিশেষ করে তাহিরপুরের বগিয়ানী-১ আহাম্মকখালী স্লুইস গেট, বিশ্বম্ভরপুরের পাইপ স্লুইস গেট, কৃষ্ণতলা পাইপ স্লুইসগেট, জামালগঞ্জের রাইঙ্গা ও বুরিডাঙ্গা রেগুলেটর, ডালিয়া রেগুলেটর, বেহেলী রেগুলেটর এবং ধর্মপাশার ধানকুনিয়া রেগুলেটর দীর্ঘদিন ধরে অচল।

এছাড়া পওর বিভাগের ২৪টি রেগুলেটরের মধ্যে ৩টি সম্পূর্ণ অচল এবং ৬টি অচল হওয়ার পথে। সচল ১৩টির মধ্যেও ৬টি সংস্কার করা জরুরি। বিশেষ করে নলুয়ার হাওরের তিনটি রেগুলেটর অকেজো থাকায় কৃষকদের বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিএডিসি নির্মিত বেশিরভাগ রেগুলেটরও অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কৃষকদের দাবি, এসব রেগুলেটর সংস্কার না হলে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে এবং ফসলহানির পাশাপাশি মাছের চলাচলও ব্যাহত হবে।

জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, “নলুয়ার হাওরের তিনটি রেগুলেটর অকেজো। এগুলো পানি নিষ্কাশন করতে পারছে না, ফলে জলাবদ্ধতার সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে।”

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, “স্লুইসগেট পানি নিষ্কাশনের পুরনো ও কার্যকর উপায় হলেও এগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। রেগুলেটরের পথ প্রশস্ত করা এবং নৌ চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।”

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, “নতুন প্রকল্পের আওতায় একাধিক রেগুলেটর নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে পানি নিষ্কাশন সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।”

ট্যাগ:

রাত সাড়ে ৯টার পর সিলেটের সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে

হাওরের রেগুলেটর অচল: বোরো ফসল ও মৎস্য সম্পদ ঝুঁকিতে

প্রকাশের সময়: ০৮:৫০:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

হাওরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম রেগুলেটরগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। হাওরে নির্মিত ৫৭টি রেগুলেটরের মধ্যে ১২টি সম্পূর্ণ অচল, আর ৩৬টি কার্যকর হলেও সেগুলোরও মেরামত প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বোরো মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে ফসলহানির ঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মৎস্য সম্পদ।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পওর) তথ্য অনুযায়ী, তাদের অধীনে ৩৩টি রেগুলেটরের মধ্যে ৯টি সম্পূর্ণ অচল, ২৩টি আংশিক সচল, তবে কার্যকর রাখতে হলে ৩১টি রেগুলেটরেরই সংস্কার প্রয়োজন। বিশেষ করে তাহিরপুরের বগিয়ানী-১ আহাম্মকখালী স্লুইস গেট, বিশ্বম্ভরপুরের পাইপ স্লুইস গেট, কৃষ্ণতলা পাইপ স্লুইসগেট, জামালগঞ্জের রাইঙ্গা ও বুরিডাঙ্গা রেগুলেটর, ডালিয়া রেগুলেটর, বেহেলী রেগুলেটর এবং ধর্মপাশার ধানকুনিয়া রেগুলেটর দীর্ঘদিন ধরে অচল।

এছাড়া পওর বিভাগের ২৪টি রেগুলেটরের মধ্যে ৩টি সম্পূর্ণ অচল এবং ৬টি অচল হওয়ার পথে। সচল ১৩টির মধ্যেও ৬টি সংস্কার করা জরুরি। বিশেষ করে নলুয়ার হাওরের তিনটি রেগুলেটর অকেজো থাকায় কৃষকদের বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিএডিসি নির্মিত বেশিরভাগ রেগুলেটরও অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কৃষকদের দাবি, এসব রেগুলেটর সংস্কার না হলে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে এবং ফসলহানির পাশাপাশি মাছের চলাচলও ব্যাহত হবে।

জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, “নলুয়ার হাওরের তিনটি রেগুলেটর অকেজো। এগুলো পানি নিষ্কাশন করতে পারছে না, ফলে জলাবদ্ধতার সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে।”

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, “স্লুইসগেট পানি নিষ্কাশনের পুরনো ও কার্যকর উপায় হলেও এগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। রেগুলেটরের পথ প্রশস্ত করা এবং নৌ চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।”

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, “নতুন প্রকল্পের আওতায় একাধিক রেগুলেটর নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে পানি নিষ্কাশন সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।”