জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে নয় বছর এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে তারেককে দুদক আইন ও দণ্ডবিধির পৃথক দুই ধারায় তিন বছর ও ছয় বছর মিলিয়ে মোট নয় বছরের সাজা দেয়া হয়। এ ছাড়া তাকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
অন্যদিকে জোবাইদাকে দুদক আইন ও দণ্ডবিধির দুটি পৃথক ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুই কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেছেন আদালত।
গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় দুদকের পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করে দেন।
চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওয়ান-ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০০৮ সালে তিন আসামিকেই অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবাইদা। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। পরে ফের মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর গত বছরের ১ নভেম্বর আদালত তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে এ বছরের ১৯ জানুয়ারি তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
গত ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। গত ২৪ জুলাই মামলার ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্য নেয়া শেষ করেন আদালত।