লন্ডন ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন শেষে নিজের কাজে ফিরবেন: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার পর নিজের কাজে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে নির্বাচন করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। এ উপলক্ষে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “আমার চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোরপূর্বক এ কাজে আনা হয়েছে। আমি প্যারিসে আমার কাজ উপভোগ করছিলাম। সেখান থেকে আমাকে এখানে আনা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি আবার আমার স্বাভাবিক কাজে ফিরে যেতে চাই। সারা জীবন ধরে যা করেছি এবং তরুণ প্রজন্ম যা ভালোবাসে, সেই কাজেই ফিরব। আমার গড়া কার্যক্রমে ফিরে যাওয়াই আমার ইচ্ছা।”

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তিনি জঙ্গিবাদের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না। তরুণরা ধর্মের প্রতি নিরপেক্ষ এবং তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে আগ্রহী। এই তরুণরাই বিশ্বের পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, “বিশেষত তরুণীদের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তারা দেশের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ ও সক্ষমতা রয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, তার অস্থায়ী সরকারের ক্যাবিনেটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিন তরুণ, যারা অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি বলেন, “এরা গত শতাব্দীর নয়, বর্তমান শতাব্দীর তরুণ, যারা যথেষ্ট সক্ষম ও প্রতিভাবান।”

দ্য ইকোনমিস্ট তাদের বর্ষসেরা দেশ নির্বাচনের পেছনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ গত ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে। পাঁচটি দেশের চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম নির্বাচিত হয়েছে।

পত্রিকাটি উল্লেখ করে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া আন্দোলনের মাধ্যমে। তার শাসনামলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি দমন-পীড়ন, নির্বাচন কারচুপি, এবং বিরোধীদের ওপর দমনমূলক নীতি চালানো হয়।

বর্তমান অস্থায়ী সরকার ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী এবং নাগরিক সমাজের সমর্থনে ক্ষমতায় এসেছে। তারা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রেখেছে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

নির্বাচন শেষে নিজের কাজে ফিরবেন: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রকাশের সময়: ০৫:৫৭:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার পর নিজের কাজে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে নির্বাচন করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। এ উপলক্ষে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “আমার চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোরপূর্বক এ কাজে আনা হয়েছে। আমি প্যারিসে আমার কাজ উপভোগ করছিলাম। সেখান থেকে আমাকে এখানে আনা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি আবার আমার স্বাভাবিক কাজে ফিরে যেতে চাই। সারা জীবন ধরে যা করেছি এবং তরুণ প্রজন্ম যা ভালোবাসে, সেই কাজেই ফিরব। আমার গড়া কার্যক্রমে ফিরে যাওয়াই আমার ইচ্ছা।”

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তিনি জঙ্গিবাদের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না। তরুণরা ধর্মের প্রতি নিরপেক্ষ এবং তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে আগ্রহী। এই তরুণরাই বিশ্বের পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, “বিশেষত তরুণীদের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তারা দেশের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ ও সক্ষমতা রয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, তার অস্থায়ী সরকারের ক্যাবিনেটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিন তরুণ, যারা অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি বলেন, “এরা গত শতাব্দীর নয়, বর্তমান শতাব্দীর তরুণ, যারা যথেষ্ট সক্ষম ও প্রতিভাবান।”

দ্য ইকোনমিস্ট তাদের বর্ষসেরা দেশ নির্বাচনের পেছনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ গত ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে। পাঁচটি দেশের চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম নির্বাচিত হয়েছে।

পত্রিকাটি উল্লেখ করে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া আন্দোলনের মাধ্যমে। তার শাসনামলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি দমন-পীড়ন, নির্বাচন কারচুপি, এবং বিরোধীদের ওপর দমনমূলক নীতি চালানো হয়।

বর্তমান অস্থায়ী সরকার ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী এবং নাগরিক সমাজের সমর্থনে ক্ষমতায় এসেছে। তারা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রেখেছে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।