লন্ডন ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৌলা নদী থেকে বালু লুট : দেখার কেউ নেই

দোয়ারাবাজার সীমান্তের কাছে মৌলা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে। বিজিবি ক্যাম্পের নাকের ডগায় প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রাক ও ট্রলিতে বালু ভর্তি করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে, কিন্তু এর প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেই। এই অনিয়ন্ত্রিত উত্তোলনের ফলে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে, দুই তীরের বসতি ও স্লুইসগেট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। বালুভর্তি ভারী যানবাহনের চলাচলে রাস্তাঘাট ভেঙে পড়েছে, আর ধুলোবালিতে বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশতলা (হকনগর) বিজিবি ক্যাম্পের মাত্র কয়েক’শ গজ দূরে হকনগর বাজারের পূর্ব পাশে মৌলা নদী থেকে কয়েকটি ট্রাক ও ট্রলি বালু তুলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাহাঙ্গীর আলমসহ একদল বালুখেকো দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে লিপ্ত। এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হকনগর স্লুইসগেট ও আশপাশের বসতবাড়ি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে।

এছাড়া, শহীদ স্মৃতিসৌধ এলাকার সরকারি জমি দখল করে বসতঘর ও বহুতল ভবন নির্মাণের মতো কার্যক্রমও চলছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

বালু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম স্বীকার করেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করেই তাঁরা এই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, এতে স্থানীয় দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বাঁশতলা (হকনগর) বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার ওমর আলী বলেন, “বালু উত্তোলন মূলত ভূমি অফিসের অধীন। আমরা নিয়মিত বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু একটি অসাধু চক্র এখনও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।”

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুশান্ত সিংহ জানান, “মৌলা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এভাবে প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে মৌলা নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন পরিবেশ ও মানুষের জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

মৌলা নদী থেকে বালু লুট : দেখার কেউ নেই

প্রকাশের সময়: ০৬:১৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

দোয়ারাবাজার সীমান্তের কাছে মৌলা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে। বিজিবি ক্যাম্পের নাকের ডগায় প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রাক ও ট্রলিতে বালু ভর্তি করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে, কিন্তু এর প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেই। এই অনিয়ন্ত্রিত উত্তোলনের ফলে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে, দুই তীরের বসতি ও স্লুইসগেট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। বালুভর্তি ভারী যানবাহনের চলাচলে রাস্তাঘাট ভেঙে পড়েছে, আর ধুলোবালিতে বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশতলা (হকনগর) বিজিবি ক্যাম্পের মাত্র কয়েক’শ গজ দূরে হকনগর বাজারের পূর্ব পাশে মৌলা নদী থেকে কয়েকটি ট্রাক ও ট্রলি বালু তুলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাহাঙ্গীর আলমসহ একদল বালুখেকো দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে লিপ্ত। এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হকনগর স্লুইসগেট ও আশপাশের বসতবাড়ি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে।

এছাড়া, শহীদ স্মৃতিসৌধ এলাকার সরকারি জমি দখল করে বসতঘর ও বহুতল ভবন নির্মাণের মতো কার্যক্রমও চলছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে।

বালু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম স্বীকার করেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করেই তাঁরা এই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, এতে স্থানীয় দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বাঁশতলা (হকনগর) বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার ওমর আলী বলেন, “বালু উত্তোলন মূলত ভূমি অফিসের অধীন। আমরা নিয়মিত বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু একটি অসাধু চক্র এখনও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।”

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুশান্ত সিংহ জানান, “মৌলা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এভাবে প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে মৌলা নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন পরিবেশ ও মানুষের জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।