লন্ডন ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে ১৬ ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি গঠন, রাজনৈতিক মহলে প্রশংসিত বিএনপি

সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি ১৬টি ইউনিটে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের জন্য সফল সমাবেশ আয়োজন করেছে, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সুনামগঞ্জের রাজনীতিতে এই উদ্যোগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

দলের নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করেছেন প্রায় ৪০০ নেতা। আহ্বায়ক পদ পেতে দুই থেকে আটজন করে প্রার্থী প্রতিযোগিতায় রয়েছেন। তবে প্রতিযোগিতা থাকা সত্ত্বেও সমাবেশগুলোতে শৃঙ্খলার অভাব দেখা যায়নি। দলের অভ্যন্তরে বলয় ও গ্রুপিং থাকলেও এগুলো সমাবেশে প্রভাব ফেলেনি।

২৫ বছরেও সফল নয় আওয়ামী লীগ

স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতনরা জানিয়েছেন, গত ২৫ বছরে সুনামগঞ্জের ১৬ ইউনিটে আওয়ামী লীগ সম্মেলন বা সমাবেশ করে কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২২ সালে একটি উদ্যোগ নিলেও দিরাইয়ে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর পর কার্যক্রম স্থগিত হয়। এর আগে ছাতক ও দোয়ারাসহ অনেক ইউনিটে বারবার চেষ্টা করেও সমাবেশ করতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

বিএনপির সুশৃঙ্খল উদ্যোগ

দুই মাসের মধ্যে ১৬টি ইউনিটে সফলভাবে সমাবেশ আয়োজন করে বিএনপি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। নভেম্বরের শাল্লা উপজেলা দিয়ে শুরু করে জানুয়ারি মাসে দোয়ারাবাজারে সমাপ্তি ঘটে। প্রতিটি সমাবেশে “খালেদা জিয়া-তারেক রহমান” ছাড়া অন্য কোনো স্লোগান শোনা যায়নি।

কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি

সমাবেশগুলোতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি ছিল। সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন প্রতিটি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এছাড়া অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুল ও আব্দুল হক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আহ্বায়ক পদে প্রতিযোগিতা

জেলার প্রতিটি ইউনিটে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেতে প্রতিযোগিতা করছেন স্থানীয় নেতারা। ছাতক, দোয়ারাবাজার, দিরাই, তাহিরপুর, জামালগঞ্জসহ সব উপজেলায় প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, “দলীয় নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন নির্যাতিত হয়েছেন। এখন নতুন পরিস্থিতিতে সুশৃঙ্খলভাবে কমিটি গঠনের কাজ করছি। তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে টিমওয়ার্ক ছিল, যা আমাদের সাফল্যের কারণ।”

কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, “তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি। ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়িয়ে দেশ ও দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করাই আমাদের লক্ষ্য।”

সুনামগঞ্জে বিএনপির এই সুশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড তৃণমূল নেতাদের উদ্দীপ্ত করেছে। দলীয় নেতা-কর্মীরা এই সফলতাকে ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডে ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

সুনামগঞ্জে ১৬ ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি গঠন, রাজনৈতিক মহলে প্রশংসিত বিএনপি

প্রকাশের সময়: ০৪:২৪:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি ১৬টি ইউনিটে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের জন্য সফল সমাবেশ আয়োজন করেছে, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সুনামগঞ্জের রাজনীতিতে এই উদ্যোগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

দলের নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করেছেন প্রায় ৪০০ নেতা। আহ্বায়ক পদ পেতে দুই থেকে আটজন করে প্রার্থী প্রতিযোগিতায় রয়েছেন। তবে প্রতিযোগিতা থাকা সত্ত্বেও সমাবেশগুলোতে শৃঙ্খলার অভাব দেখা যায়নি। দলের অভ্যন্তরে বলয় ও গ্রুপিং থাকলেও এগুলো সমাবেশে প্রভাব ফেলেনি।

২৫ বছরেও সফল নয় আওয়ামী লীগ

স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতনরা জানিয়েছেন, গত ২৫ বছরে সুনামগঞ্জের ১৬ ইউনিটে আওয়ামী লীগ সম্মেলন বা সমাবেশ করে কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২২ সালে একটি উদ্যোগ নিলেও দিরাইয়ে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর পর কার্যক্রম স্থগিত হয়। এর আগে ছাতক ও দোয়ারাসহ অনেক ইউনিটে বারবার চেষ্টা করেও সমাবেশ করতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

বিএনপির সুশৃঙ্খল উদ্যোগ

দুই মাসের মধ্যে ১৬টি ইউনিটে সফলভাবে সমাবেশ আয়োজন করে বিএনপি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। নভেম্বরের শাল্লা উপজেলা দিয়ে শুরু করে জানুয়ারি মাসে দোয়ারাবাজারে সমাপ্তি ঘটে। প্রতিটি সমাবেশে “খালেদা জিয়া-তারেক রহমান” ছাড়া অন্য কোনো স্লোগান শোনা যায়নি।

কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি

সমাবেশগুলোতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি ছিল। সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন প্রতিটি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এছাড়া অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুল ও আব্দুল হক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আহ্বায়ক পদে প্রতিযোগিতা

জেলার প্রতিটি ইউনিটে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেতে প্রতিযোগিতা করছেন স্থানীয় নেতারা। ছাতক, দোয়ারাবাজার, দিরাই, তাহিরপুর, জামালগঞ্জসহ সব উপজেলায় প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, “দলীয় নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন নির্যাতিত হয়েছেন। এখন নতুন পরিস্থিতিতে সুশৃঙ্খলভাবে কমিটি গঠনের কাজ করছি। তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে টিমওয়ার্ক ছিল, যা আমাদের সাফল্যের কারণ।”

কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, “তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি। ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়িয়ে দেশ ও দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করাই আমাদের লক্ষ্য।”

সুনামগঞ্জে বিএনপির এই সুশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড তৃণমূল নেতাদের উদ্দীপ্ত করেছে। দলীয় নেতা-কর্মীরা এই সফলতাকে ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডে ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।