সুনামগঞ্জ-১ আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ পৌর শহরে থাকা তাঁর বাড়িতে গিয়ে সেটির পরিমাপ করেছেন তাঁরা। সোমবার তাঁর গ্রামের বাড়ি জেলার ধর্মপাশা উপজেলার নওধার গ্রামে গিয়েছিলেন দুদক কর্মকর্তারা। বুধবার যাবেন তাহিরপুর উপজেলায়। সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী আসনটি জেলার ধর্মপাশা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত।
সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেনকে ঢাকার যুবলীগ নেতা বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমমের সঙ্গে সম্পর্ক, অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো কারবার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তাঁর বিদেশযাত্রাও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। শুধু তাই নয় তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মল্লিকপুর এলাকায় থাকা মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়ি ‘স্পর্শ স্পন্দন ড্রিম হাউজে’ যান দুদকের অনুসন্ধান দলের কর্মকর্তা। সঙ্গে সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরাও ছিলেন। তাঁরা বাড়িটি পরিমাপ করেন। বাড়িটি পরিমাপ ও মোয়াজ্জেম হোসেনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) কয়েকজন সদস্যও সেখানে ছিলেন। সোমবার একইভাবে ধর্মপাশা উপজেলার নওধার গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের বিলাস বহুল বাড়ি ‘হাওর বাংলায়’ গিয়ে সেটির পরিমাপ করা হয়।
অনুসন্ধান দলের সদস্য দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান ভুঁইয়া জানান, মোয়াজ্জেমন হোসেনের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল। ৫ আগস্টের পর আরও কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের পরিচালক আবদুল মাজেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল তাঁর অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছেন। এই দলের বাকি দুই সদস্য হলেন দুদকের অতিরিক্ত পরিচালক গুলশান আনোয়ার ও উপসহাকারী পরিচালক এলমান আহমেদ।
মাহমুদুল হাসান ভুঁইয়া জানান, এর আগেও মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগে অনুসন্ধান হয়েছে। সেগুলোর তথ্য দুদকে আছে। এখন সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনো, ময়মনসিংহ এবং ঢাকায় অনুসন্ধান চলছে। তাঁরা সব জায়গায় যাবেন। অনুসন্ধান শেষে দুদকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন ২০০৮ সালে প্রথম নৌকা প্রতীক নিয়ে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও একইভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোননয় না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন।