লন্ডন ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্বম্ভরপুরে ‘কৃষাণ চত্বর’ ভাঙচুর, পুনঃনির্মাণের দাবিতে জনসাধারণের ক্ষোভ

 

সম্প্রতি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের চালবন্দ পয়েন্ট এলাকায় স্থাপিত ‘কৃষাণ চত্বর’ ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় কৃষকরা এই ভাস্কর্য পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাদি উর রহমান সাদিদের পরিকল্পনায় নির্মিত ‘কৃষাণ চত্বর’ কৃষি ও কৃষকের ঐতিহ্য তুলে ধরার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। পাশে একটি যাত্রী ছাউনি থাকায় এটি দর্শনার্থীদেরও আকর্ষণ করছিল।

তবে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে কিছু লোক কৃষকের ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি হাতুড়ি দিয়ে ভাস্কর্যটি ভাঙছেন এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিচ্ছেন।

আইন-শৃঙ্খলা কমিটির উদ্বেগ ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

সুনামগঞ্জ জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়। তৎকালীন পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান বলেন, “এটি দুঃখজনক ঘটনা। যদি কারও আপত্তি থাকত, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত।”

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, “এভাবে ভাঙচুর করলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়, যা কাম্য নয়। মতভিন্নতা থাকলে প্রশাসনের মাধ্যমে আলোচনার সুযোগ ছিল।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া ও পুনর্নির্মাণের দাবি

ভাস্কর্যটি ভাঙার ঘটনায় চালবন্দ এলাকার কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কৃষক মনির হোসেন বলেন, “ভাস্কর্যটি ভাঙার মাধ্যমে কৃষক সমাজের সম্মান ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।”

কৃষক দ্বীন ইসলাম বলেন, “ভাস্কর্যের কারণে চালবন্দ নতুনভাবে পরিচিত হয়েছিল। কী দোষে এটি ভাঙা হলো, আমরা জানি না।” কৃষক আব্দুল মান্নান, জসিম উদ্দিন, কামাল উদ্দিনসহ অনেকেই পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

সংস্কারের অনিশ্চয়তা

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, “কৃষাণ চত্বর সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ প্রকৌশল বিভাগ করে। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।”

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী একরামুল হোসেন জানান, “আমাদের বাজেট নেই। এটি ইউএনও অফিসের নির্মাণ বাজেট থেকে করা হয়েছিল। সংস্কারের জন্য তাদের তহবিল থেকে ব্যয় করা সম্ভব।”

এদিকে, ভাস্কর্য পুনঃনির্মাণের দাবি নিয়ে স্থানীয়দের আন্দোলন ও প্রশাসনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছে জনসাধারণ।

ট্যাগ:

বিশ্বম্ভরপুরে ‘কৃষাণ চত্বর’ ভাঙচুর, পুনঃনির্মাণের দাবিতে জনসাধারণের ক্ষোভ

প্রকাশের সময়: ০৯:২০:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

 

সম্প্রতি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের চালবন্দ পয়েন্ট এলাকায় স্থাপিত ‘কৃষাণ চত্বর’ ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় কৃষকরা এই ভাস্কর্য পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাদি উর রহমান সাদিদের পরিকল্পনায় নির্মিত ‘কৃষাণ চত্বর’ কৃষি ও কৃষকের ঐতিহ্য তুলে ধরার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। পাশে একটি যাত্রী ছাউনি থাকায় এটি দর্শনার্থীদেরও আকর্ষণ করছিল।

তবে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে কিছু লোক কৃষকের ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি হাতুড়ি দিয়ে ভাস্কর্যটি ভাঙছেন এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিচ্ছেন।

আইন-শৃঙ্খলা কমিটির উদ্বেগ ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

সুনামগঞ্জ জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়। তৎকালীন পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান বলেন, “এটি দুঃখজনক ঘটনা। যদি কারও আপত্তি থাকত, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত।”

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, “এভাবে ভাঙচুর করলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়, যা কাম্য নয়। মতভিন্নতা থাকলে প্রশাসনের মাধ্যমে আলোচনার সুযোগ ছিল।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া ও পুনর্নির্মাণের দাবি

ভাস্কর্যটি ভাঙার ঘটনায় চালবন্দ এলাকার কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কৃষক মনির হোসেন বলেন, “ভাস্কর্যটি ভাঙার মাধ্যমে কৃষক সমাজের সম্মান ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।”

কৃষক দ্বীন ইসলাম বলেন, “ভাস্কর্যের কারণে চালবন্দ নতুনভাবে পরিচিত হয়েছিল। কী দোষে এটি ভাঙা হলো, আমরা জানি না।” কৃষক আব্দুল মান্নান, জসিম উদ্দিন, কামাল উদ্দিনসহ অনেকেই পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

সংস্কারের অনিশ্চয়তা

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, “কৃষাণ চত্বর সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ প্রকৌশল বিভাগ করে। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।”

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী একরামুল হোসেন জানান, “আমাদের বাজেট নেই। এটি ইউএনও অফিসের নির্মাণ বাজেট থেকে করা হয়েছিল। সংস্কারের জন্য তাদের তহবিল থেকে ব্যয় করা সম্ভব।”

এদিকে, ভাস্কর্য পুনঃনির্মাণের দাবি নিয়ে স্থানীয়দের আন্দোলন ও প্রশাসনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছে জনসাধারণ।