শিশু সোলাইমান ইসলামকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে গিয়ে তার পরিবার চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। জন্মনিবন্ধন সনদে তার নামসহ বাবা-মায়ের নাম ভুলভাবে লিপিবদ্ধ থাকায় সংশোধনের প্রয়োজন হয়। তবে সংশোধনের আবেদন করতে গিয়ে দেখা যায়, ২০২১ সালে জন্মনিবন্ধন করার সময় ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি পরিবারের বাইরের একজনের ছিল। ফলে মোবাইল নম্বর সংশোধনের জন্য তাদের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হয়।
সোলাইমানের বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধনেও একই সমস্যা দেখা দেয়। তাদের নামের ভুল থাকার পাশাপাশি মোবাইল নম্বরও ভিন্ন ছিল, যা সংশোধন করা না গেলে জন্মনিবন্ধন সংশোধন সম্ভব নয়। ফলে একাধিকবার তাদেরকে ধর্মপাশায় গিয়ে আবেদন করতে হয়েছে। গত দুই মাস ধরে এই সমস্যার কারণে সোলাইমান বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি। শুধু জন্মনিবন্ধন সংশোধনই নয়, মধ্যনগর উপজেলার ইংরেজি নামের বিভ্রান্তির কারণে পাসপোর্ট তৈরিতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
প্রশাসনিক কার্যক্রমের সহজীকরণের লক্ষ্যে ২০২১ সালের ২৬ জুলাই মধ্যনগরকে নতুন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে এখনো প্রশাসনিক কাঠামো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম ধর্মপাশা থেকে পরিচালিত হওয়ায় মধ্যনগরবাসীকে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইডি তৈরির দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।
এ সমস্যা সমাধানে গত বৃহস্পতিবার মধ্যনগরবাসীর পক্ষ থেকে সদর ইউনিয়নের গলইখালী গ্রামের অসীম সরকার বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের রেজিস্টার জেনারেল বরাবর আবেদন করেছেন। তিনি জানান, জন্মনিবন্ধন সার্ভারে মধ্যনগর উপজেলার অপশন না থাকায় নতুন জন্মনিবন্ধনে ধর্মপাশা উপজেলার নাম অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও সমস্যা সৃষ্টি করবে। এছাড়া, পাসপোর্ট সার্ভারে মধ্যনগরের ইংরেজি বানান “MADHANAGARI” এবং ডাকঘরের সার্ভারে “MODDHONAGAR” লিপিবদ্ধ রয়েছে, যা প্রকৃতপক্ষে “MADHYANAGAR” হওয়া উচিত। ফলে পাসপোর্ট তৈরিতে অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় জানান, আবেদন অনলাইনে পাওয়া যায় এবং আবেদনকারীরা চাইলে সংশ্লিষ্ট ইউপি সচিবের মাধ্যমে হার্ডকপি পাঠিয়ে দিতে পারেন। উপযুক্ত কাগজপত্র থাকলে দ্রুত সংশোধন করা হয়।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল রায় জানান, মধ্যনগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে সাত মাস আগে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের রেজিস্টার জেনারেলকে ধর্মপাশা থেকে পৃথকীকরণের বিষয়ে জানানো হয়েছে। তবে এখনো এটি বাস্তবায়িত হয়নি। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হলে মধ্যনগরবাসীর ভোগান্তি কমবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।