লন্ডন ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শান্তিগঞ্জে অক্ষত বাঁধের প্রকল্পেও কোটি টাকার বরাদ্দ

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আস্তমা-ডাবর সেতু থেকে উথারিয়া বাঁধ পর্যন্ত আটটি প্রকল্পের মধ্যে সাতটিই ছিল অক্ষত, তবুও এসব প্রকল্পে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারি খাস জমি থেকে সামান্য মাটি এনে বাঁধের ওপর ফেলা হলেও কাজ এখনো শেষ হয়নি।

অক্ষত বাঁধেও বড় বাজেট

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উথারিয়া বাঁধে কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে মাটির কাজ করছেন এবং দুর্বাঘাস লাগানোর চেষ্টা করছেন। আস্তমা থেকে উথারিয়া পর্যন্ত তিনটি প্রকল্প ও মহাসিং নদীর অপর পাড়ের চারটি প্রকল্পও অক্ষত থাকলেও সেখানে সরকারি বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনে অনিয়ম হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সার্ভেয়ারদের প্রভাবিত করে প্রকল্পের মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যার ভিত্তিতে প্রতিটি প্রকল্পে ১৬ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়।

দুর্নীতির অভিযোগ ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য

হাওর বাঁচাও আন্দোলন শান্তিগঞ্জ শাখার সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, “আস্তমা-ডাবর থেকে উথারিয়া বাঁধ পর্যন্ত আটটির মধ্যে সাতটি প্রকল্পই অক্ষত ছিল। একবার ঘুরলেই বোঝা যায় প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগে আগেই মাটি ছিল। কিন্তু সেখানে নতুন বরাদ্দ দেখিয়ে অর্থ লুটপাট করা হয়েছে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব-স্টেশন অফিসার (এসও) মো. মমিন মিয়া বলেন, “প্রকল্পগুলোর মাটির কাজ শেষ হয়েছে, এখন দুর্বাঘাস লাগানোর কাজ চলছে। তবে কাজের সময়সীমা ১০ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বরাদ্দ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সার্ভেয়ারদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই বাজেট অনুমোদন হয়েছে, এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।’”

তবে স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ নয়-ছয় করা হয়েছে, যা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন।

 

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

শান্তিগঞ্জে অক্ষত বাঁধের প্রকল্পেও কোটি টাকার বরাদ্দ

প্রকাশের সময়: ০৯:৫৯:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আস্তমা-ডাবর সেতু থেকে উথারিয়া বাঁধ পর্যন্ত আটটি প্রকল্পের মধ্যে সাতটিই ছিল অক্ষত, তবুও এসব প্রকল্পে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারি খাস জমি থেকে সামান্য মাটি এনে বাঁধের ওপর ফেলা হলেও কাজ এখনো শেষ হয়নি।

অক্ষত বাঁধেও বড় বাজেট

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উথারিয়া বাঁধে কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে মাটির কাজ করছেন এবং দুর্বাঘাস লাগানোর চেষ্টা করছেন। আস্তমা থেকে উথারিয়া পর্যন্ত তিনটি প্রকল্প ও মহাসিং নদীর অপর পাড়ের চারটি প্রকল্পও অক্ষত থাকলেও সেখানে সরকারি বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনে অনিয়ম হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সার্ভেয়ারদের প্রভাবিত করে প্রকল্পের মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যার ভিত্তিতে প্রতিটি প্রকল্পে ১৬ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়।

দুর্নীতির অভিযোগ ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য

হাওর বাঁচাও আন্দোলন শান্তিগঞ্জ শাখার সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, “আস্তমা-ডাবর থেকে উথারিয়া বাঁধ পর্যন্ত আটটির মধ্যে সাতটি প্রকল্পই অক্ষত ছিল। একবার ঘুরলেই বোঝা যায় প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগে আগেই মাটি ছিল। কিন্তু সেখানে নতুন বরাদ্দ দেখিয়ে অর্থ লুটপাট করা হয়েছে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব-স্টেশন অফিসার (এসও) মো. মমিন মিয়া বলেন, “প্রকল্পগুলোর মাটির কাজ শেষ হয়েছে, এখন দুর্বাঘাস লাগানোর কাজ চলছে। তবে কাজের সময়সীমা ১০ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বরাদ্দ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সার্ভেয়ারদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই বাজেট অনুমোদন হয়েছে, এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।’”

তবে স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ নয়-ছয় করা হয়েছে, যা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন।