সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওরের বোরো ফসল রক্ষার বেড়িবাঁধের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা। অন্যদিকে, ধানের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কৃষকরা এখন বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন।
বেড়িবাঁধ নির্মাণের অগ্রগতি
জানা গেছে, উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওরসহ ছোট-বড় সব হাওরে বোরো ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। পোল্ডার-১, পোল্ডার-২, সুরিয়া বিবিয়ানা ও কুশিয়ারা নদীর ডানদিক পর্যন্ত মোট ২৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের কাজ হচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৪০টি পিআইসি প্রকল্পের মাধ্যমে এই নির্মাণকাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু হয় এবং ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সময়সীমা বাড়িয়েও এখনো পুরো কাজ শেষ হয়নি।
স্থানীয়দের মতামত
১৩ মার্চ সরেজমিনে নলুয়ার হাওরের পশ্চিমপ্রান্ত ভুরাখালি ও বেতাউকা গ্রামে পরিদর্শন করে দেখা যায়, ২ থেকে ১০ নম্বর পিআইসি অংশের মাটিকাটার কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা জানান, কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সাবেক ইউপি সদস্য রনধীর কান্তি দাস রান্টু বলেন, “আমাদের কাজ শেষ, এখন শুধু দুর্বাঘাস লাগানোর কাজ চলছে।”
৮ ও ৯ নম্বর প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ইউপি সদস্য লিলু মিয়া ও রুবেল আহমদ জানান, তাদের কাজও শেষ হয়েছে।
তবে স্থানীয় কৃষকদের একাংশ বলছেন, এখনো ৭০ ভাগ কাজ হয়েছে, বাকি কাজ শেষ করা প্রয়োজন। তারা জানান, বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হওয়ায় তারা শঙ্কিত।
বৃষ্টির জন্য কৃষকদের অপেক্ষা
বাঁধের কাজ নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও কৃষকদের মূল দুশ্চিন্তা এখন বৃষ্টির অভাব। কৃষকরা জানান, ধানের সঠিক বৃদ্ধির জন্য এখন বৃষ্টির ছোঁয়া দরকার। বৃষ্টি না হওয়ায় ধান লালচে হয়ে যাচ্ছে, যা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, “এবার জগন্নাথপুরে ২০ হাজার ৪২৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে ১ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিকটন ধান কৃষকের গোলায় উঠবে।”
উপজেলা পাউবো প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল জানান, “বাঁধের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে, কোনো শঙ্কা নেই।” তবে কৃষকরা কাজের গতি ও জলবায়ুর অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়ে গেছেন।