পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে সুনামগঞ্জের বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও তা ধীরে-ধীরে এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসতে শুরু করেছে। অন্যান্য বছর রমজানের মাঝামাঝি সময়ে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও এ বছর অধিকাংশ পণ্যের দাম এখন নিম্নমুখী। তবে চাল ও তেলে কিছুটা অস্বস্তি রয়েছে।
জেলা প্রশাসন নিয়মিত বাজার মনিটরিং করায় কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবছর নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে পারেনি অসাধু ব্যবসায়ীরা – এমনটাই মন্তব্য করছেন সাধারণ মানুষজন।
শনিবার (১৫ মার্চ) সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কিচেন মার্কেট, জেল রোড, জগন্নাথবাড়ি এলাকার বাজারচিত্র পর্যবেক্ষণে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মোটা জাতের চাল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৭ টাকায়। এছাড়া ২৮ সিদ্ধ চাল কেজি প্রতি ৬৫, পাইজাম সিদ্ধ ৬৩, নাজিরশাইল ৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের চেয়ে কিছুটা বাড়লেও, চাহিদা অনুযায়ী পাচ্ছেন না দোকানীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, রমজানের শুরুতে ক্রেতাদের কেনাকাটার যে চাপ থাকে, এক সপ্তাহ পেরিয়ে যেতেই তা কমতে থাকে। ফলে এখন নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতাদের কেনাকাটার কোনো চাপ নেই। ফলে দামও কিছুটা কমতির দিকে।
দোকানগুলোতে আগের তুলনায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
চালের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ২ মাসে তেমন একটা চালের দাম না বাড়লেও দাম কমেনি।
কিছু পণ্যের দাম কমেছে
জানাযায়, রমজানের আগে চড়া থাকা শসা, লেবু ও বেগুনের দাম কমতে শুরু করেছে।
- গত সপ্তাহে প্রতি হালি লেবু ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হলেও সেটি চলতি সপ্তাহে দাম কমে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়।
- কমেছে বেগুনের দামও। মান ও জাতভেদে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
- প্রতিকেজি শসা ও খিরা বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৩৫-৪০ টাকায়।
- ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৭০-২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০-৫৫০ টাকা, আর হাঁস ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
- গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০-৭৫০ টাকা কেজি।
ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছর রোজায় শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দাম চড়ে থাকলেও এবার অনেকটাই স্বস্তি মিলছে বাজারে।
মোটাদাগে বলতে গেলে, এ বছর পবিত্র রমজানে বেশ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে মুদিপণ্যের দাম। রোজা শুরুর আগে বাজারে যে অরাজকতা থাকে এবার তা দেখা যায়নি।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, “আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রমজান মাসে যেন বাজার স্থিতিশীল থাকে। এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। বর্তমানে বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম নিম্নমুখী রয়েছে।”