সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে দখল করে গড়ে উঠা দোকানপাট বারবার উচ্ছেদ করেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। দখলদাররা পুনরায় স্থাপনা নির্মাণ করায় উচ্ছেদ কার্যক্রমে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হলেও ফলাফল শূন্য বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার দিনব্যাপী সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের ওয়েজখালী থেকে জাউয়াবাজার পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। পথচারীদের অনেকেই অভিযানের সময় বলতে শোনা যায়, “এসব করে লাভ কী, কাল থেকেই আবার স্থাপনা হবে, মহাসড়ক দখল হবে।”
দখলদারদের ক্ষোভ ও দাবি
দিরাই পয়েন্টের চায়ের দোকানদার হোসাইন আহমদ বলেন, “সকালে এসে মেশিন দিয়ে আমার দোকান ভেঙে দিয়েছে। গত বছর ভাঙার পর দোকানটি নতুন করে নির্মাণ করেছিলাম। এখনো সে টাকা উঠেনি। যদি নির্মাণের সময় বাধা দিত, তাহলে গরিব মানুষের এত ক্ষতি হতো না।”
তদারকির অভাব নিয়ে অভিযোগ
ওয়েজখালীর মুদি দোকানদার মো. আজিজুর রহমান বলেন, “উচ্ছেদ কার্যক্রম শেষে যদি সঠিক তদারকি করা হতো, তাহলে দখলদাররা নতুন করে স্থাপনা গড়ার সাহস পেত না। কিন্তু এসব বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো গুরুত্ব দেয় না।”
স্থানীয় দোকানদার আফতারুল ইসলাম বলেন, “বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। একবার ভেঙে ফেলার পর যদি দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে তারা দ্বিতীয়বার স্থাপনা নির্মাণের সাহস করত না।”
সওজ বিভাগের বক্তব্য
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, “বুধবার সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট এবং রাতে পুনরায় স্থাপনা নির্মাণের কারণে বারবার অভিযান পরিচালনা করতে হচ্ছে।”
স্থানীয়দের প্রস্তাব
বড়পাড়ার বাসিন্দা মো. সুলেমান মিয়া বলেন, “অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে সড়ক বিভাগের অসৎ কর্মচারীদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। নির্মাণের সময় বাধা দেওয়া হলে এবং কার্যকর তদারকি করা হলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।”
সমাধানের আহ্বান
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং উচ্ছেদ-পরবর্তী সংরক্ষণ ও তদারকি জোরদার করা না হলে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে এই সমস্যা অব্যাহত থাকবে।