তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া-চারাগাঁও-বাগলী শুল্ক স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন ইটভাটা ও সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কয়লা ও চুনাপাথর সরবরাহে ব্যবহৃত সহস্রাধিক ইঞ্জিনচালিত নৌকা দীর্ঘ নৌ-জটের কারণে আটকা পড়ে রয়েছে। উপজেলার মাটিয়ান হাওর সংলগ্ন হাঁসমারা বিল থেকে পাইকারতলা নদীর চার কিলোমিটার নৌ-পথজুড়ে গত ১০ দিন ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিদিন গড়ে ২০টি নৌকা জট থেকে বের হতে পারলেও, বিপরীতে ৫০-৬০টি নতুন নৌকা এসে পেছনে যোগ হচ্ছে।
শুক্রবার সরেজমিনে পাটলাই নদীতে এ নৌ-জট পরিদর্শন করেন তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি খসরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক সবুজ আলম ও সহ-সভাপতি বাচ্চু মিয়া। তাদের সঙ্গে বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী শুল্ক স্টেশনের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ঢাকা, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, খুলনা, বরিশালসহ সারা দেশের বিভিন্ন ইটভাটা ও সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কয়লা ও চুনাপাথর সরবরাহের জন্য এই নৌপথটি ব্যবহৃত হয়। তবে সুলেমানপুরের পাটলাই নদীতে নৌ-জটের কারণে কোটি কোটি টাকার পণ্যবাহী নৌকা চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এ সময় চাঁদাবাজি, হুমকি-ধমকি ও লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মাঝি ও ব্যবসায়ীরা জানান, হেমন্তকালে নদীর পানি কমে যাওয়ায় পলি জমে নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। এ কারণে গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে মাঘ থেকে চৈত্র পর্যন্ত এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
কয়লা আমদানিকারক বোরহান উদ্দিন জানান, তার দুটি কয়লা বোঝাই নৌকা গত ৯-১০ দিন ধরে আটকা পড়ে ছিল। এর মধ্যে একটি ছেড়ে গেছে, তবে আরেকটি এখনও আটকা। সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় তার মতো শত শত ব্যবসায়ী আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সবুজ আলম বলেন, বড়ছড়া-চারাগাঁও-বাগলী শুল্ক স্টেশন থেকে সরকার প্রতিবছর ৭০-৮০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। এ অবস্থায় পাটলাই ও পাইকরতলা নদী জরুরি ভিত্তিতে খননের দাবি জানান তিনি। সভাপতি খসরুল আলম বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে প্রতিবছর ব্যবসায়ীদের এই ভোগান্তি পোহাতে হয়।
ব্যবসায়ী ও মাঝিরা আশা প্রকাশ করেছেন, নিয়মিত তদারকি ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হলে ২-৩ দিনের মধ্যেই এই নৌ-জট নিরসন সম্ভব।