বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে দিরাইয়ে দিনব্যাপী হাওর উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলার কালনী নদীর তীরে উজানধলের মাঠে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ছিল আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বৃক্ষরোপণ, চারা বিতরণ, গম্ভীরা পরিবেশন, হাওরাঞ্চলের মরমি সাধক ও বাউলদের জনপ্রিয় গানের আসর এবং প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। হাওরের সাতটি জেলার ৪৯টি উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া এবং সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল। ‘পলি ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশের প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
মূল বক্তব্যে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পলি হাওরের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর এক বিলিয়ন টন পাথর, নুড়ি ও বালু নেমে আসার ফলে নদী, খাল ও জলাভূমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধান না হলে ৫০ বছর পর বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে। তিনি হাওরাঞ্চলের জীবনমান উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, মানুষ সচেতন হলে প্রকৃতি ও পরিবেশের উন্নয়ন সম্ভব। নদী, হাওর ও জলাভূমির নাব্য বাড়ালে মাছ, জলজ উদ্ভিদ ও পর্যটন বৃদ্ধি পাবে।
আলোচনায় হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সাত জেলার প্রতিনিধিরা মতামত দেন। তাঁরা হাওরপাড়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানান। এ সময় পৃথক হাওর মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন, প্রথম আলো’র নিজস্ব প্রতিবেদক শহীদ জগজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি’র সাধারণ সম্পাদক খলিল রহমান, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হকসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।