শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হওয়ার এক মাস পার হয়ে গেলেও হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় এখনো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যবই হাতে পাননি।
কয়েকটি শ্রেণিতে কিছু বই বিতরণ করা হলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখনো প্রয়োজনীয় বই থেকে বঞ্চিত। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মাত্র তিনটি করে বই পেলেও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনো কোনো বই পাননি। একই সংকট দেখা দিয়েছে উপজেলার মাদ্রাসাগুলোতেও। তবে প্রাথমিক স্তরে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া হলেও প্রাক্-প্রাথমিকের ‘আমার বই’ এখনো বিতরণ করা হয়নি। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই পেয়েছেন, তবে বাকি বইগুলো ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিতরণের কথা রয়েছে।
বই সংকটের ফলে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকেরা আশঙ্কা করছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করা কঠিন হয়ে পড়বে, যা শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্র জানায়, এই উপজেলায় ২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই পেলেও অষ্টম শ্রেণির জন্য কোনো বই আসেনি। নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে কিছু বই বাকি থাকলেও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মোটামুটি সব বই পেয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় ২২৩টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন।
শিক্ষক ও অভিভাবকরা বলছেন, যথাসময়ে বই হাতে না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে, যা তাদের পড়াশোনার ক্ষতি করছে। পাথারিয়া ইউনিয়নের সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সামনে রমজান মাস ও অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা থাকায় সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে। তিনি দ্রুত বই বিতরণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
সুনামগঞ্জ জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এই বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মনিটরিং করছে। ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব বই বিতরণের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে চেষ্টা চলছে ১৫ তারিখের মধ্যেই বই পৌঁছে দেওয়ার।”