লন্ডন ১১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাটলাই নদীতে নৌযানজট: স্থায়ী সমাধান চান ব্যবসায়ীরা

তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদীতে নাব্যতা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে, ফলে প্রতিনিয়ত নৌযানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে পাথর ও কয়লাবোঝাই নৌকা দীর্ঘ সময় আটকে থেকে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলছে।

দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে শুষ্ক মৌসুমে এই সমস্যার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও কার্যকর সমাধানের উদ্যোগ দেখা যায়নি। নৌশ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের দাবি, নদীতে গভীর খনন প্রকল্প বাস্তবায়নই নৌযানজট নিরসনের স্থায়ী সমাধান হতে পারে।

জানা গেছে, তাহিরপুর উপজেলার বড়চড়া, বাগলী ও চারাগাঁও শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত চুনাপাথর ও কয়লা পাটলাই নদী হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হয়। নদীপথ সহজলভ্য হওয়ায় ব্যবসায়ীরা সড়কের পরিবর্তে এটি বেছে নেন। তবে বর্ষাকালে নৌপথ স্বাভাবিক থাকলেও শীতকালে পানির স্তর কমে যাওয়া ও ভারতের পাহাড়ি পলির কারণে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যায়, ফলে সৃষ্টি হয় নৌযানজট।

বিশেষ করে পাটলাই নদীর সুলেমানপুর অংশে নৌজট তীব্র আকার ধারণ করেছে, যেখানে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিপুলসংখ্যক নৌযান আটকে আছে। ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত সময়ে পণ্য পরিবহন করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

স্থানীয় নৌশ্রমিক নেতা উকিল আলী বলেন, “নদীর তলদেশ একেবারে ভরাট হয়ে গেছে। ঘাটে ঘাটে নৌকা আটকে যাচ্ছে, কখনো কখনো এক স্থানে আটকে পড়লে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে বের হতে। এতে নৌশ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”

পাথর ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া বলেন, “আমরা সরকারকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রদান করলেও নৌযানজট নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থায়ীভাবে নদী খনন না করলে এ সমস্যা চলতেই থাকবে।”

এ বিষয়ে তাহিরপুর কয়লা আমদানি গ্রুপের সভাপতি মো. খসরুল মিয়া বলেন, “নৌযানজট সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে নদী খনন। আমরা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়েছি। আশা করি, সরকার ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।”

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, জেলার ১৯টি নদী খননের প্রকল্পের আওতায় পাটলাই নদীও রয়েছে এবং এটি বর্তমানে অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। অনুমোদন পেলে বৃহৎ পরিসরে খনন কাজ শুরু হবে। তবে সাময়িকভাবে বিডাব্লিউটিএ ভেকুর সাহায্যে আটকে পড়া নৌযানের পথ পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে।

ব্যবসায়ী ও নৌশ্রমিকরা দ্রুত এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন, যাতে নৌপথ সহজ ও নিরাপদ হয়ে ওঠে।

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

পাটলাই নদীতে নৌযানজট: স্থায়ী সমাধান চান ব্যবসায়ীরা

প্রকাশের সময়: ০৭:৪১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদীতে নাব্যতা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে, ফলে প্রতিনিয়ত নৌযানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে পাথর ও কয়লাবোঝাই নৌকা দীর্ঘ সময় আটকে থেকে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলছে।

দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে শুষ্ক মৌসুমে এই সমস্যার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও কার্যকর সমাধানের উদ্যোগ দেখা যায়নি। নৌশ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের দাবি, নদীতে গভীর খনন প্রকল্প বাস্তবায়নই নৌযানজট নিরসনের স্থায়ী সমাধান হতে পারে।

জানা গেছে, তাহিরপুর উপজেলার বড়চড়া, বাগলী ও চারাগাঁও শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত চুনাপাথর ও কয়লা পাটলাই নদী হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হয়। নদীপথ সহজলভ্য হওয়ায় ব্যবসায়ীরা সড়কের পরিবর্তে এটি বেছে নেন। তবে বর্ষাকালে নৌপথ স্বাভাবিক থাকলেও শীতকালে পানির স্তর কমে যাওয়া ও ভারতের পাহাড়ি পলির কারণে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যায়, ফলে সৃষ্টি হয় নৌযানজট।

বিশেষ করে পাটলাই নদীর সুলেমানপুর অংশে নৌজট তীব্র আকার ধারণ করেছে, যেখানে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিপুলসংখ্যক নৌযান আটকে আছে। ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত সময়ে পণ্য পরিবহন করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

স্থানীয় নৌশ্রমিক নেতা উকিল আলী বলেন, “নদীর তলদেশ একেবারে ভরাট হয়ে গেছে। ঘাটে ঘাটে নৌকা আটকে যাচ্ছে, কখনো কখনো এক স্থানে আটকে পড়লে ১০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে বের হতে। এতে নৌশ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”

পাথর ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া বলেন, “আমরা সরকারকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রদান করলেও নৌযানজট নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থায়ীভাবে নদী খনন না করলে এ সমস্যা চলতেই থাকবে।”

এ বিষয়ে তাহিরপুর কয়লা আমদানি গ্রুপের সভাপতি মো. খসরুল মিয়া বলেন, “নৌযানজট সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে নদী খনন। আমরা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়েছি। আশা করি, সরকার ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।”

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, জেলার ১৯টি নদী খননের প্রকল্পের আওতায় পাটলাই নদীও রয়েছে এবং এটি বর্তমানে অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। অনুমোদন পেলে বৃহৎ পরিসরে খনন কাজ শুরু হবে। তবে সাময়িকভাবে বিডাব্লিউটিএ ভেকুর সাহায্যে আটকে পড়া নৌযানের পথ পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে।

ব্যবসায়ী ও নৌশ্রমিকরা দ্রুত এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন, যাতে নৌপথ সহজ ও নিরাপদ হয়ে ওঠে।