২০২৪ সাল ছিল বিশ্বের উষ্ণতম বছর, আর বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে রেকর্ড ২৬ দিন তাপপ্রবাহ বয়ে গিয়েছিল। তীব্র গরমে প্রাণ হারান অন্তত ১৫ জন। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর ফল মেলেনি। এবারও বৈশ্বিক পূর্বাভাস অনুযায়ী বাংলাদেশে স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক গরম পড়তে পারে, যা জনস্বাস্থ্য, কৃষি ও পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতি ও বৈশ্বিক পূর্বাভাস
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে গড় তাপমাত্রা শিল্প-পূর্ব সময়ের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এল নিনোর প্রভাব কমলেও ২০২৫ সাল ইতিহাসের অন্যতম উষ্ণতম বছর হতে পারে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা
জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু না হলেও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহের ধরন বদলেছে—আগে মার্চে শুরু হলেও এখন তা দেরিতে শুরু হয়ে দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
- আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ২০২২-২০২৭ সাল পর্যন্ত সময়কাল উষ্ণতম হতে পারে।
- আবহাওয়া বিজ্ঞানী রবিউল আউয়াল বলেন, নগরায়ণ, কংক্রিটের বিস্তার ও জলাশয় কমে যাওয়ার ফলে শহরগুলোতে তাপমাত্রা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।
- পরিবেশবিদ আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নানা পরিকল্পনা থাকলেও মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন নেই।
- নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জলাশয় ভরাট ও কংক্রিটের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে শহরগুলো উত্তপ্ত হচ্ছে।
সরকারি প্রস্তুতি কতটুকু?
পরিবেশ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, কার্যকর ফল পেতে সময় লাগবে। বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেছেন, গ্রীষ্ম ও রমজানে লোডশেডিং কমানোর চেষ্টা চলছে, তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট পুরোপুরি বন্ধ হবে না। সিটি করপোরেশন গাছ লাগানোর কার্যক্রম বৃদ্ধির আশ্বাস দিলেও তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।