লন্ডন ০৫:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে এবারও হাওরের মাটি কাটা হচ্ছে কলমে!

সুনামগঞ্জে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ধীরগতির কারণে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দাবি করেছে, ইতোমধ্যে ৮২% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছেন, বাস্তবে কাজের অগ্রগতি ৫০% এরও কম। তাদের অভিযোগ, পাউবো খাতা-কলমে অগ্রগতি দেখাচ্ছে, যা বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু সরেজমিনে দিরাই, শাল্লা, মধ্যনগর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, শান্তিগঞ্জসহ বিভিন্ন হাওরে পরিদর্শনে দেখা গেছে, অনেক বাঁধে মাটি ফেলার কাজ এখনো বাকি। অসম্পূর্ণ রয়েছে ক্লোজার ও ভাঙা মাটি ভরাটের কাজ। এছাড়া, কমপেকশন, দুরমুজ, চাটাই ও বস্তা ফেলার কাজও সম্পন্ন হয়নি। ফলে, বোরো ফসলের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।

তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরের কৃষক আব্দুর রব জানান, “মাটিয়ান হাওরে কিছুদিন হলো কাজ শুরু হয়েছে। এখনো বাঁধে মাটি ফেলা হচ্ছে। দুরমুজ হয়নি। বৃষ্টি এলে মাটি ধুয়ে যাবে। কোনো বাঁধেই ঘাস লাগানো হয়নি।”

শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের কৃষক পরিমল কান্তি বলেন, “বাঁধের কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে না। এতে ফসল ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীতে পানি এলে হাওরে প্রবেশ করবে।”

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন বলেন, “পাউবো খাতা-কলমে কাজ দেখাচ্ছে। মুখে বলছে কাজ শেষ, বাস্তবে অর্ধেকও হয়নি। বাঁধ টেকসই না হলে পানির প্রথম ধাক্কায় ভেঙে হাওরডুবি হবে। সরকার এত বরাদ্দ দেওয়ার পরও যদি বাঁধ ভেঙে হাওরডুবি হয়, এর দায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নিতে হবে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, “ইতোমধ্যে ৮২% কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, বাকি ১০ দিনে শতভাগ সম্পন্ন করা যাবে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এবার বাঁধের কাজ ভালো হয়েছে।”

তবে, কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের দাবি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে বোরো ফসলের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাবে। দ্রুত ও মানসম্মতভাবে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

ট্যাগ:

সুনামগঞ্জে এবারও হাওরের মাটি কাটা হচ্ছে কলমে!

প্রকাশের সময়: ০৭:২৪:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সুনামগঞ্জে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ধীরগতির কারণে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দাবি করেছে, ইতোমধ্যে ৮২% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছেন, বাস্তবে কাজের অগ্রগতি ৫০% এরও কম। তাদের অভিযোগ, পাউবো খাতা-কলমে অগ্রগতি দেখাচ্ছে, যা বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু সরেজমিনে দিরাই, শাল্লা, মধ্যনগর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, শান্তিগঞ্জসহ বিভিন্ন হাওরে পরিদর্শনে দেখা গেছে, অনেক বাঁধে মাটি ফেলার কাজ এখনো বাকি। অসম্পূর্ণ রয়েছে ক্লোজার ও ভাঙা মাটি ভরাটের কাজ। এছাড়া, কমপেকশন, দুরমুজ, চাটাই ও বস্তা ফেলার কাজও সম্পন্ন হয়নি। ফলে, বোরো ফসলের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।

তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরের কৃষক আব্দুর রব জানান, “মাটিয়ান হাওরে কিছুদিন হলো কাজ শুরু হয়েছে। এখনো বাঁধে মাটি ফেলা হচ্ছে। দুরমুজ হয়নি। বৃষ্টি এলে মাটি ধুয়ে যাবে। কোনো বাঁধেই ঘাস লাগানো হয়নি।”

শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের কৃষক পরিমল কান্তি বলেন, “বাঁধের কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে না। এতে ফসল ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীতে পানি এলে হাওরে প্রবেশ করবে।”

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন বলেন, “পাউবো খাতা-কলমে কাজ দেখাচ্ছে। মুখে বলছে কাজ শেষ, বাস্তবে অর্ধেকও হয়নি। বাঁধ টেকসই না হলে পানির প্রথম ধাক্কায় ভেঙে হাওরডুবি হবে। সরকার এত বরাদ্দ দেওয়ার পরও যদি বাঁধ ভেঙে হাওরডুবি হয়, এর দায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নিতে হবে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, “ইতোমধ্যে ৮২% কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, বাকি ১০ দিনে শতভাগ সম্পন্ন করা যাবে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এবার বাঁধের কাজ ভালো হয়েছে।”

তবে, কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের দাবি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে বোরো ফসলের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাবে। দ্রুত ও মানসম্মতভাবে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।