শীতের শেষের দিকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করায় বিদ্যুতের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্চে এই চাহিদা আরও বেড়ে যেতে পারে, কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে সমস্যা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় অল্প সময়ের জন্য লোডশেডিং শুরু হয়েছে। বিশেষত রোজার মাসে লোডশেডিং নিয়মিত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্চে বিদ্যুৎ চাহিদা সর্বোচ্চ ১৬ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে, যা গত বছর ১২ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে ছিল। তবে এই চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। গত তিন বছরের মতো এবারের গ্রীষ্মেও লোডশেডিং হতে পারে। বিদ্যুৎ–ঘাটতি পূরণ করতে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পিডিবি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, গ্যাস ও কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা থাকলেও গ্যাস সরবরাহ ও কয়লা আমদানির সমস্যা রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বকেয়া বিল রয়েছে, যা উৎপাদনক্ষমতার সংকট সৃষ্টি করছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পাওয়ার গ্রিড পিএলসি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাস বিদ্যুতের চাহিদা ১০ হাজার মেগাওয়াটের নিচে থাকলেও বর্তমানে এটি ১১ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে।
এছাড়া, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে বেশ কিছু ইউনিটে কয়লার অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষত, বড়পুকুরিয়া, রামপাল ও মহেশখালীর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে সরবরাহের সমস্যা রয়েছে। তবে, পিডিবি জানিয়েছে, মার্চে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে তেলচালিত কেন্দ্রগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, তবে তেল আমদানির সমস্যা রয়েছে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মালিকরা জানিয়েছেন, তেল আমদানি না করলে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। তবে, পিডিবি তেল সরবরাহ করলে গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ, বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে, লোডশেডিং কমিয়ে আনার জন্য সরকারকে বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী উদ্যোগ গ্রহণ এবং জ্বালানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।