লন্ডন ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাষা আন্দোলনের ৬ যুগ পরও তাহিরপুরে শহীদ মিনারের অভাব

ভাষা আন্দোলনের ছয় দশক পেরিয়ে গেলেও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় একটি শহীদ মিনারও নির্মাণ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, উপজেলার ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা কলাগাছ কিংবা চেয়ার দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে জাতীয় দিবসগুলো পালন করতে বাধ্য হয়।

তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় ১৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২১টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬টি আলিয়া মাদ্রাসা এবং ২টি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। তবে এর মধ্যে মাত্র ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১টি ডিগ্রি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। মাদ্রাসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার গড়ে তোলা হয়নি, এমনকি এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর পদক্ষেপও নেই।

তাহিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী সাদেক আলী বলেন, “ভাষা আন্দোলনের শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য উপজেলায় এখনো একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নেই, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই বাধ্য হয়ে বাজারের প্রবেশমুখের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়।”

মধ্য তাহিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা আরও সহজ হতো। কিন্তু শহীদ মিনার না থাকায় তাদের উপজেলা সদরের স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হয়

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঘা বলেন, “মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের স্মৃতি ধরে রাখতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা জরুরি। এটি শুধু শ্রদ্ধার বিষয় নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।”

উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান শেখ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই, তবে পরিকল্পনা রয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসেম বলেন, উপজেলা সদরে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ট্যাগ:
জনপ্রিয়

ভাষা আন্দোলনের ৬ যুগ পরও তাহিরপুরে শহীদ মিনারের অভাব

প্রকাশের সময়: ০৯:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভাষা আন্দোলনের ছয় দশক পেরিয়ে গেলেও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় একটি শহীদ মিনারও নির্মাণ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, উপজেলার ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা কলাগাছ কিংবা চেয়ার দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে জাতীয় দিবসগুলো পালন করতে বাধ্য হয়।

তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় ১৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২১টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬টি আলিয়া মাদ্রাসা এবং ২টি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। তবে এর মধ্যে মাত্র ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১টি ডিগ্রি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। মাদ্রাসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার গড়ে তোলা হয়নি, এমনকি এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর পদক্ষেপও নেই।

তাহিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী সাদেক আলী বলেন, “ভাষা আন্দোলনের শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য উপজেলায় এখনো একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নেই, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই বাধ্য হয়ে বাজারের প্রবেশমুখের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়।”

মধ্য তাহিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা আরও সহজ হতো। কিন্তু শহীদ মিনার না থাকায় তাদের উপজেলা সদরের স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হয়

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঘা বলেন, “মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের স্মৃতি ধরে রাখতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা জরুরি। এটি শুধু শ্রদ্ধার বিষয় নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।”

উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান শেখ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই, তবে পরিকল্পনা রয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসেম বলেন, উপজেলা সদরে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে