সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের বনগাঁও গুচ্ছ গ্রামের ৬০টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ সংকটে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বসবাসকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি।
পানি ও বিদ্যুতের অভাবে মানবেতর জীবন
গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এলাকায় কোনো নলকূপ নেই, ফলে পাশের নদী ও খালের পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যার পর পুরো গ্রাম অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।
বাসিন্দা দিপা রানী সরকার বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে এখানে এসেছিলাম, কিন্তু এখন বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ ছাড়া জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’ আরেক বাসিন্দা কল্পনা রানী দাস বলেন, ‘পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, কিভাবে এখানে থাকবো? ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভয়ে রাত কাটাতে হয়।’
প্রশাসনের উদাসীনতা
গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা জরিপ উল্যাহ জানান, তিন বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এই গুচ্ছ গ্রাম তৈরি করা হয়। কিন্তু সেই থেকে পানির জন্য নলকূপ বা বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়নি। বিদ্যুতের খুঁটি ও তার বসানো হলেও মিটার না পাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি।
সুমন মিয়া নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘বিদ্যুতের খুঁটি ও তার টানানো হলেও মিটার না থাকায় আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ফলে চুরি-ডাকাতির আতঙ্কে ছেলেমেয়ে নিয়ে অনিরাপদ অবস্থায় রাত কাটাতে হচ্ছে।’
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঙ্গুর মিয়া জানান, গুচ্ছ গ্রামের পানির সংকট ও বিদ্যুৎ সমস্যার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্যাহ জানান, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত মিটার সরবরাহের অনুরোধ করা হয়েছে। তবে মিটার সংকটের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বিলম্ব হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করতেও সমস্যা হচ্ছে। তিনি আশ্বাস দেন, গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য দ্রুত পানির ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে।
বসবাসকারীরা দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছেন।